সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে নুসরাত জাহান তানজিনার (২০) সঙ্গে হৃদয় নামে এক ছেলের পরিচয় হয়। পারিবারিক অভাবের কারণে চাকরির জন্য হৃদয়ের প্রলোভনে ঢাকায় যান তানজিনা। এরপর হৃদয়ের ফাঁদে পরে ঢাকার বিভিন্ন হোটেলে অসামাজিক কাজে জড়িয়ে যান।

তানজিনা গত ৪ মার্চ নিজ এলাকার নবম শ্রেণির এক মাদরাসাছাত্রী ও অষ্টম শ্রেণির এক স্কুলছাত্রীকে কাপড়ের দোকানে চাকরির কথা বলে ঢাকায় নিয়ে যান। এরপর তাদের নিয়ে হৃদয়ের বাসায় যায় তানজিনা। পর দিন হৃদয় দুই ছাত্রীকে হোটেলে নিয়ে অসামাজিক কাজ করতে বাধ্য করেন। 

পরে ওই দুই ছাত্রীর পরিবার তানজিনাকে চাপ দিলে হৃদয় তাদের গাড়িতে করে বাড়িতে পাঠিযে দেন। মানিকগঞ্জের সাটুরিয়ার গোলড়া বাসস্ট্যান্ড থেকে পুলিশ ওই দুই ছাত্রীকে উদ্ধার করে। এ ঘটনায় মাদরাসাছাত্রীর বাবা মামলা করলে পুলিশ অভিযুক্ত তানজিনাকে গ্রেপ্তার করে।

বৃহস্পতিবার (৯ মার্চ) দুপুরে নিজ কার্যালয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান মানিকগঞ্জের পুলিশ সুপার গোলাম আজাদ খান।  

প্রেস ব্রিফিংয়ে উদ্ধার হওয়া দুই ছাত্রী জানায়, একই গ্রামের মেয়ে হওয়ায় তানজিনার সঙ্গে ভালো সম্পর্ক তাদের। তানজিনা তাদেরকে ঢাকায় কাপড়ের দোকানে চাকরির প্রলোভন দেখান। কিন্তু ঢাকায় যাওয়ার পর কাপড়ের দোকানে চাকরি না দিয়ে হৃদয় নামে এক ছেলেকে দিয়ে হোটেলে অসামাজিক কাজ করতে বাধ্য করান।

অভিযুক্ত নুসরাত জাহান তানজিনা জানান, হৃদয়ের সঙ্গে ফেসবুকে পরিচয় তার। এরপর অভাবের কারণে ঢাকায় গিয়ে হৃদয়ের কথায় তিনি বিভিন্ন হোটেলে গিয়ে দেহ ব্যবসা শুরু করেন। ওই দুই ছাত্রীকে তিনি হৃদয়ের কাছে পাঠিয়ে ছিলেন। কিন্তু ওই ছাত্রীদের পরিবার ও পুলিশের চাপে দুই তাদেরকে বাড়িতে পাঠানোর কথা বলেন হৃদয়কে।

পুলিশ সুপার গোলাম আজাদ খান জানান, সাটুরিয়ায় একই দিনে দুই ছাত্রীর নিখোঁজ হওয়ার ঘটনা ঘটে। পুলিশ বিষয়টি তদন্ত করে জানতে পারে নুসরাত জাহান তানজিনা নামে এক নারী ওই দুই ছাত্রীকে চাকরির লোভ দেখিয়ে ঢাকায় পাচার করেছে। উদ্ধার হওয়া ছাত্রীরা জানিয়েছে- তাদেরকে অসামাজিক কাজে বাধ্য করা হয়েছে। এ ঘটনায় উদ্ধার হওয়া এক শিক্ষার্থীর বাবা বাদী হয়ে মামলা করেছেন। তাদের ডাক্তারি পরীক্ষা করা হয়েছে। 

এ ঘটনায় নুসরাত জাহান তানজিনাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। হৃদয়কে গ্রেপ্তারে পুলিশ কাজ করছে। এই চক্রটি গ্রামের সহজ-সরল নারীদের চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে প্রথমে দেহব্যবসা করায় ও পরে দেশের বাইরে পাচার করে দেয়।

সোহেল হোসেন/আরএআর