চট্টগ্রামের হালিশহরে প্রাইভেটকারের সঙ্গে মোটরসাইকেলের সংঘর্ষে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সন্তান মো. মুজাহিদ নিহতের ঘটনায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরজুড়ে বইছে শোকের হাওয়া। সোমবার রাতে চট্টগ্রামে দুর্ঘটনার পরপরই খবর আসে ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের শান্তিবাগের বাড়িতে। 

নিহত মুজাহিদ চট্টগ্রাম নগর পুলিশের ট্রাফিক সার্জেন্ট হিসেবে কর্মরত ছিলেন। ডিউটি শেষে বাসায় ফেরার পথে সোমবার (১৩ মার্চ) দিবাগত রাত সাড়ে ১০টার দিকে হালিশহর থানার আউটার রিং রোড ওয়াই জংশন এলাকায় সড়ক দুর্ঘটনায় তার মৃত্যু হয়। মুজাহিদ ২০১৭ ব্যাচের সার্জেন্ট ছিলেন। তাদের বাড়ি শহরের শান্তিবাগের জুবিলী রোডে। তিনি মৃত মো. হাফিজুর রহমানের ছেলে। 

চট্টগ্রাম ট্রাফিক বিভাগ জানায়, মুজাহিদ পতেঙ্গা এলাকায় ডিউটি শেষে করে মোটরসাইকেলযোগে আউটার রিং রোড দিয়ে ফৌজদারহাটের দিকে বাসায় যাচ্ছিলেন। পেছন থেকে একটি প্রাইভেটকার ধাক্কা দিলে তিনি গুরুতর আহত হন। পরে তাকে হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

হালিশহর থানা পুলিশের সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) হারুনুর রশিদ নিশ্চিত করে বলেন, পুলিশ প্রাইভেটকারটি জব্দ করে চালককে আটক করেছে। এ ঘটনায় হালিশহরও শোকার্ত।

মঙ্গলবার (১৪ মার্চ) সকালে চট্টগ্রামের দামপাড়া পুলিশ লাইন্স মাল্টিপারপাস শেডে নিহত সার্জেন্ট মো. মুজাহিদ চৌধুরীর ১ম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। পরে পুলিশ এসকর্টের মাধ্যমে তার লাশ ব্রাহ্মণবাড়িয়া শান্তিবাগের বাড়িতে আনা হয়। এসময় সেখানে আবেগ ঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়। পরিবারের স্বজন-আত্মীয়-বন্ধু-বান্ধবসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ শোকার্তের বাড়িতে উপস্থিত হয়ে সমবেদনা জানান। 

উপস্থিত হন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) মো. ইকবাল হোছাইন পিপিএম, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ এমরানুল ইসলাম ও টিআই (এডমিন) দেবব্রত করসহ পুলিশের কর্মকর্তাগণ। 

পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শাখাওয়াত হোসেনের পক্ষে তারা মুজাহিদের কফিনে পুষ্পস্তবক অর্পণ ও শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। মুজাহিদের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে সমবেদনা জানান। পরে বাদ এশা শহরের শেরপুর ঈদগাহ মাঠে বিপুল সংখ্যক মুসল্লির উপস্থিতিতে দ্বিতীয় জানাজা নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। সেখান থেকে কফিন নিয়ে যাওয়া হয় গ্রামের বাড়ি জেলার আশুগঞ্জ থানার তালশহরের পশ্চিম পাড়ায়। সেখানে তৃতীয় জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে চিরনিদ্রায় শায়িত করা হবে মুজাহিদকে।

বাহাদুর আলম/এমএএস