জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০৩তম জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবসে পটুয়াখালীর বাউফলে আয়োজিত আনন্দ র‍্যালিকে কেন্দ্র করে দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল মোতালেব হাওলাদারসহ ১৫ জন আহত হয়েছেন। 

শুক্রবার (১৭ মার্চ) বাউফল হাই স্কুল মাঠ থেকে আনন্দ র‍্যালি শুরু হয়ে উপজেলা পরিষদ চত্বরে গিয়ে পৌঁছালে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল মোতালেব হাওলাদার গ্রুপ ও সংসদ সদস্য আ স ম ফিরোজ মোল্লা গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। 

জানা গেছে, বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন পালনে বাউফলে আওয়ামী লীগ চার ভাগে বিভক্ত হয়ে কর্মসূচি ঘোষণা করে। এতে এক পক্ষে নেতৃত্বে রয়েছেন বর্তমান সংসদ সদস্য আ স ম ফিরোজ। অপর পক্ষে রয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও পৌর মেয়র জিয়াউল হক জুয়েল। অপর আরও একটি পক্ষের নেতৃত্বে রয়েছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল মোতালেব হাওলাদার। এছাড়াও হাসিব আলম তালুকদারের পক্ষ থেকেও কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে মিছিল নিয়ে মোতালেব হাওলাদার ও তার কর্মী-সমর্থকরা দলীয় কার্যালয় জনতা ভবনের দিকে রওয়ানা হলে উপজেলা পরিষদের সামনের গেটে পুলিশ বাধা দেয়।

 একপর্যায়ে মিছিলটি ছত্রভঙ্গ করতে প্রথমে লাঠিচার্জ ও পরে রাবার বুলেট এবং টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে পুলিশ। বাধা উপেক্ষা করে মোতালেব হাওলাদারসহ কয়েকজন নেতাকর্মী জনতা ভবনের দিকে রওয়ানা হলে গেটের অদূরেই আ স ম ফিরোজ মোল্লা সমর্থিত কর্মী-সমর্থকরা মোতালেব হাওলাদারের ওপর হামলা করে। এতে মোতালেবসহ আহত হন অন্তত ১৫ জন। এ সময় উত্তেজিত নেতাকর্মীদের ইটপাটকেলে আহত হন পুলিশসহ অন্তত আরও ১০ জন। শহরজুড়ে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।

এ বিষয়ে বাউফল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত চিকিৎসক মো. সোয়েব মাহমুদ জানান, মোতালেব হাওলাদারের শরীরে বিভিন্ন অংশে দেশীয় অস্ত্র ও লাঠির আঘাত রয়েছে। তার অবস্থা গুরুতর। এছাড়াও রিপন নামে অপর এক কর্মীর শরীরে একাধিক রাবার বুলেটের আঘাত থাকায় তাদের দুজনকে বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। 

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আল আমিন বলেন, আজকের অনুষ্ঠানের ব্যাপারে দুই পক্ষকে একসঙ্গে বসানোর চেষ্টা করেছি। কিন্তু তারা রাজি হননি। ফুল দিয়ে যাওয়ার পথে সংঘর্ষ সৃষ্টি হয় দুই গ্রুপের মধ্যে। 

এ বিষয়ে বাউফল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আল মামুন বলেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ লাঠিচার্জ করে এবং পরবর্তীতে পুলিশ বাধ্য হয়ে ২০ রাউন্ড রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে। এ সময় পুলিশের চার-পাঁচ জন সদস্য আহত হন। দলীয় কার্যালয়ে আসা-যাওয়া নিয়ে এ সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়।

মাহমুদ হাসান রায়হান/আরকে/আরএআর