বর্ষা হোসাইন বর্না

রংপুর নগরীতে দাফনের প্রায় সাড়ে ছয় মাস পর বর্ষা হোসাইন বর্না (২০) নামের এক তরুণীর মরদেহ কবর থেকে উত্তোলন করা হয়েছে। সোমবার (২০ মার্চ) সকালে নগরীর খাসবাগ এলাকার পারিবারিক কবরস্থান থেকে মরদেহটি উত্তোলন করা হয়।

পরে মরদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজ (রমেক) হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। মামলার সুষ্ঠু তদন্ত ও প্রকৃত রহস্য উদঘাটনের স্বার্থে মরদেহ উত্তোলনের আদেশ দেন আদালত।

পুলিশ ও মামলা সূত্রে জানা গেছে, বর্ষা হোসাইন বর্না খাসবাগ এলাকার বেলাল হোসেনের মেয়ে। তিনি আউটসোর্সিংয়ের কাজ করতেন। তার মা শাহিনা বেগম ও বাবা বেলাল হোসেন তাদের দুই সন্তান বর্ষা ও বাঁধনকে বাড়িতে রেখে ঢাকায় কাজ করতে যান। এরই মধ্যে খাসবাগ এলাকার রিপন মিয়ার ছেলে জিয়াদ হোসেনের (২৫) সঙ্গে বর্ষার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। একপর্যায়ে তারা শারীরিক সম্পর্কে জড়িয়ে পড়লে বর্ষার গর্ভে সন্তান আসে। বিয়ে ছাড়াই হঠাৎ বর্ষার অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার ঘটনাটি জানাজানি হয়।

বিষয়টি জিয়াদ ও তার পরিবারকে জানানো হলে তারা বর্ষার গর্ভের সন্তান নষ্ট করতে বলেন। কিন্তু বর্ষা রাজি না হওয়ায় তাদের সঙ্গে সম্পর্কের অবনতি ঘটতে থাকে। তারা বিভিন্নভাবে বর্ষাকে মানসিক নির্যাতন করতে থাকেন। একপর্যায়ে জিয়াদ ও তার পরিবারের সদস্যদের কটূক্তি সহ্য করতে না পেরে গত বছরের ২ সেপ্টেম্বর রাতে বর্ষা আত্মহত্যা করেন। এ ঘটনায় থানায় ইউডি মামলা হয়।

পরবর্তীতে রংপুরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এ ছয়জনকে আসামি করে বর্ষার মা শাহিনা বেগম মামলা করেন। মামলায় অভিযুক্তরা হলেন- জিয়াদ হোসেন, ছবি বেগম, মনি বেগম, সিরাজউদ্দিন, সাজু মিয়া ও মো. রিফাত।

এদিকে মামলার সুষ্ঠু তদন্ত ও প্রকৃত রহস্য উদঘাটনের স্বার্থে এই বছরের ১২ জানুয়ারি কবর থেকে মরদেহ উত্তোলনের আদেশ দেন আদালত। এরই ধারাবাহিকতায় আজ সোমবার সকালে বর্ষার মরদেহ কবর থেকে উত্তোলন করা হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন সহকারী কমিশনার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মালিহা খানম ও মেট্রোপলিটন কোতোয়ালি থানার পুলিশ।

মরদেহ উদ্ধারের বিষয়টি নিশ্চিত করে রংপুর সিআইডির পরিদর্শক শামসুল আলম বলেন, আদালতের নির্দেশে আজ সকালে প্রায় সাড়ে ছয় মাস আগে দাফন করা বর্ষার মরদেহটি উত্তোলন করা হয়েছে। পরে ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়।  

ফরহাদুজ্জামান ফারুক/এমজেইউ