ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার নুরুল্লাগঞ্জ ইউনিয়নের সাবেক ও বর্তমান চেয়ারম্যানের সমর্থকদের মধ্যে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। উপজেলার দুই ইউনিয়নের কয়েকশ মানুষ সংঘর্ষে লিপ্ত হয়, এরমধ্যে ২৩ জন আহত হয়েছেন।

গত মঙ্গলবার রাতে ও বুধবার সকালে দুই পক্ষের মধ্যে দফায় দফায় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়াসহ এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

এ সময় ১৩টি বাড়িতে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনাও ঘটে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে,সংঘর্ষে উপজেলার নুরুল্লাগঞ্জ ও পার্শ্ববর্তী মানিকদহ ইউনিয়নের কমপক্ষে ৭ গ্রামের কয়েকশ লোক দেশীয় অস্ত্র ও ইটপাটকেল নিয়ে অংশগ্রহণ করে।

কাঁদানে গ্যাস ছুড়ে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। সংঘর্ষ থামাতে  ভাঙ্গা থানার পাশাপাশি ফরিদপুর পুলিশ লাইন্স থেকে অতিরিক্ত পুলিশ অংশ নেয়।  

এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, নুরুল্লাগঞ্জ ইউনিয়নে দীর্ঘদিন যাবৎ আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দুটি পক্ষ সক্রিয় রয়েছে। এক পক্ষের নেতৃত্ব দেন নুরুল্লাগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সৈয়দ শাহিন আলম। অপর পক্ষের নেতৃত্ব দেন নুরুল্লাগঞ্জ ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান তরিকুল ইসলাম।এরা দুইজনই ফরিদপুর-৪(ভাঙ্গা, সদরপুর ও চরপভদ্রাসন উপজেলা) আসনের স্বতন্ত্র  সংসদ সদস্য মজিবুর রহমান চৌধুরী ওরফে নিক্সনের অনুসারী।

মঙ্গলবার সন্ধ্যায় নুরুল্লাগঞ্জ ইউনিয়নের মোল্লাকান্দা গঙ্গাধরদী গ্রামের মসজিদে ইফতার চলাকালীন সময়ে দুই পক্ষের লোকজনের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। মসজিদে ওইদিন সাবেক চেয়ারম্যান তরিকুল ইসলামের সমর্থক সরো ফকির  ইফতারের আয়োজন করেন। ওই সময় সরো ফকিরের সাথে বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান সৈয়দ শাহিন আলমের এক সমর্থকের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। এ নিয়ে দুই পক্ষের সমর্থকদের মধ্যেও কথা কাটাকাটি হয়। পরে মঙ্গলবার রাতে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। পরে বুধবার সকাল ৮টার দিকে নুরুল্লাগঞ্জ ইউনিয়নের মোল্লাকান্দা গঙ্গাধরদী, ফকিরকান্দা গঙ্গাধরদী, দক্ষিণকান্দা গঙ্গাধরদী, ধর্মদী ও মানিকদহ ইউনিয়নের পুখুরিয়া, ব্রাহ্মণকান্দা গ্রামের লোকসহ আশপাশের আরও কয়েক গ্রামের কয়েকশ লোক একটি খোলা মাঠে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। সকাল ৮টা থেকে সাড়ে ১০টা পর্যন্ত এ সংঘর্ষ চলে। এ সময় কমপক্ষে ১৩টি বাড়ি ভাংচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে কমপক্ষে ২৩ জন আহত হন।

ফরিদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ভাঙ্গা সার্কেল) হেলাল উদ্দিন ভুঁইয়া বলেন, নুরুল্লাগঞ্জ ইউনিয়নের বর্তমান ও সাবেক চেয়ারম্যানের আধিপত্যের বিরোধে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। মঙ্গলবার ইফতারের সময় দুই পক্ষের কথা কাটাকাটি নিয়ে সংঘর্ষের সূত্রপাত। বুধবার সকালে দুই পক্ষ সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। এ ঘটনায় কাউকে আটক করা হয়নি। নতুন করে সংঘর্ষ এড়াতে বর্তমানে ওই এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।

জহির হোসেন/এনএফ