নিখোঁজ রুহুল আমিন

সৌদি আরবে বাস দুর্ঘটনায় রুহুল আমিন (৩২) নামে মাদারীপুরের এক যুবক নিখোঁজ রয়েছেন বলে জানিয়েছে তার পরিবার। গত সোমবার (২৭ মার্চ) তার সঙ্গে পরিবারের শেষ কথা হয়েছিল। এরপর থেকে তার পরিবার  শত চেষ্টা করেও তার সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছে না। পরিবারের সদস্যরা রুহুল আমিনের সঙ্গে যোগাযোগ করতে না পেরে ধারণা করছেন তিনি আর বেঁচে নেই।

রুহুল আমিন মাদারীপুর সদর উপজেলার দিয়াপাড়া এলাকার মৃত ইসাহাক মাতুব্বরের ছেলে। অভাবের সংসারে সচ্ছলতা ফেরানোর আশায় গত বছরের ২ জুলাই পাঁচ লাখ টাকা ঋণ করে তিনি সৌদি আরবে যান। সেখানে আবা জেলার খামিজ শহরের একটি ভাতের হোটেলে কাজ করতেন। প্রতি মাসে ২৮ হাজার টাকা বেতন পেতেন। রুহুল আমিন দুই সন্তানের জনক। তার আট বছরের এক ছেলে ও ছয় বছরের এক মেয়ে রয়েছে। 

গত সোমবার ওমরাহ পালনের জন্য বাসে করে সৌদি আরবের মক্কার উদ্দেশে রওনা দেন রুহুল আমিন। বিকেলে ইয়েমেন সীমান্তবর্তী আসির প্রদেশের আকাবা শার এলাকায় বাসটি দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। এতে ওই বাসের ১৮ বাংলাদেশি যাত্রী নিহত হন।

বৃহস্পতিবার (৩০ মার্চ) দুপুরে রুহুল আমিনের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, বাড়িতে মানুষের সমাগম। আহাজারি করছেন পরিবারের সদস্যরা। রুহুল আমিনের মা রাবেয়া বেগম, স্ত্রী  আসমা বেগম ও বোন রুনা আক্তার কান্নায় ভেঙে পড়েছেন। তাদের সান্ত্বনা দিতে প্রতিবেশীরা অনেকেই ছুটে এসেছেন।

রুহুল আমিনের মা রাবেয়া বেগম বলেন, আমার বাজান অনেক ভালো ছিল। কখনো নিজের কষ্টর কথা আমাগো কইতো না। আমার বাজান সব সময় আমাগো নিয়া চিন্তা করতো। তোমরা আমার বাজানরে আইনা দাও। এখন কে আমারে দেখবে, মা বলে ডাকবে কে। এখন আমার মনে হয় মা বলে ডাকার আর কেউ রইল না। তোমরা আমার রুহুলের খোঁজ আইন্না দাও। ওরে আমি দেখতে চাই।

রুহুল আমিনের স্ত্রী আসমা বেগম বলেন, আমার স্বামী কাজ থেকে ওমরাহ করতে গিয়েছিলেন। তারপর থেকে তিনি নিখোঁজ রয়েছেন। আমরা জানি না উনি বেঁচে আছেন নাকি মারা গেছেন। সরকারের কাছে আমাদের আবেদন আমার স্বামীর লাশ যেন দ্রুত খুঁজে বের করা হয়। 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে মাদারীপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মাইনউদ্দিন ঢাকা পোস্টকে বলেন, উনি জীবিত আছেন নাকি মারা গেছেন এখানো আমরা সঠিক কিছু জানি না। তার বিষয়ে খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে। সঠিক তথ্য নিশ্চিত হওয়ার পরে বাকি কার্যক্রম শুরু করা হবে।
তবে তার পরিবারের ধারণা তিনি মারা গেছেন। 

রাকিব হাসান/আরএআর