ঝিনাইদহ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে বৈকালিক স্বাস্থ্যসেবা শুরু হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৩০ মার্চ) এক ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এই সেবা কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। আগামী শনিবার পহেলা এপ্রিল থেকে বৈকালিক স্বাস্থ্যসেবা পুরোদমে শুরু হবে বলে জানায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

এ সময় স্বাস্থ্য বিভাগের সহকারী পরিচালক ডা. শামসাদ রাব্বী খান, ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. সৈয়দ রেজাউল ইসলাম ও সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মিথিলা ইসলামসহ অনেক চিকিৎসক উপস্থিত ছিলেন।

উদ্বোধনের পর অর্থোপেডিক বিশেষজ্ঞ ডা. মনিরুল ইসলাম, শিশু চিকিৎসক ডা. আনোয়ারুল ইসলাম ও ডেন্টাল চিকিৎসক মেহেদী মাসুম সরকার নির্ধারিত ফি অনুযায়ী রোগী দেখেন।  

হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. সৈয়দ রেজাউল ইসলাম জানান, খুলনা বিভাগে জেলা পর্যায়ে একমাত্র ঝিনাইদহ জেনারেল হাসপাতালকে নির্বাচিত করা হয়েছে। এছাড়া মাগুরার শ্রীপুর, যশোরের মনিরামপুর, ঝিকরগাছা ও কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রকে আওতাভুক্ত করা হয়েছে।

তিনি বলেন, শনিবার থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত বৈকালিক স্বাস্থ্যসেবা প্রদানের জন্য চিকিৎসকদের একটি তালিকা করা হয়েছে। সে মোতাবেক রোগীরা সিনিয়র কনসালটেন্ট ৪০০ টাকা, জুনিয়র কনসালটেন্ট ৩০০ টাকা ও মেডিকেল অফিসারকে ২০০ টাকা দিয়ে ব্যবস্থাপত্র নিতে পারবেন। এছাড়া সরকারি হাসপাতালেই পরীক্ষা-নিরীক্ষার ব্যবস্থা থাকবে।

এদিকে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালের অর্থো সার্জরি চিকিৎসকের কাছে বৃহস্পতিবার ৫ জন রোগী ৩০০ টাকা পরিশোধ করে চিকিৎসা গ্রহণ করেন। এরমধ্যে ঝিনাইদহ সদর উপজেলার গান্না ইউনিয়নের লক্ষ্মীপুর গ্রামের আখি বেগম (৫০) এসেছিলেন বৈকালিক স্বাস্থ্যসেবা নিতে। তিনি চিকিৎসা নিয়ে জানান, সুন্দর পরিবেশে ডাক্তার আমার কথা শুনে ব্যবস্থাপত্র দিয়েছেন। এমন ব্যবস্থা চালু থাকলে রোগীরা উপকৃত হবেন।

হরিণাকুন্ডু উপজেলা থেকে ছকিনা বেগম (৫২) ও সদর উপজেলার নারিকেলবাড়িয়া থেকে রাজেদা খাতুন এসে সরকার নির্ধারিত ফি পরিশোধ করে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের কাছ থেকে ব্যবস্থাপত্র নেন। সার্জারি চিকিৎসক আব্দুল্লাহিল কাফির চেম্বারে একজন রোগী চিকিৎসা গ্রহণ করেন।

জানা গেছে, দেশের সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকরা পহেলা এপ্রিল থেকে নিজ প্রতিষ্ঠানে রোগী দেখতে পারবেন। অর্থাৎ ডাক্তাররা সরকারি হাসপাতালে ডিউটি শেষে ওই হাসপাতালেই প্রাইভেট প্র্যাকটিসের সুবিধা পাবেন। এজন্য তাদেরকে আর বাইরে ব্যক্তিগত চেম্বার, ক্লিনিক, ফার্মেসি কিংবা বেসরকারি হাসপাতালে গিয়ে রোগী দেখতে হবে না। স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে এই কার্যক্রমকে বলা হচ্ছে ইন্সস্টিটিউশনাল প্র্যাকটিস।

প্রসঙ্গত, হাসপাতালে চিকিৎসকরা সাধারণত রোগী দেখেন সকাল ৮টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত। এরপর বেশিরভাগ চিকিৎসক বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক বা ব্যক্তিগত চেম্বারে রোগী দেখে থাকেন। এখন থেকে সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসকরা বিকেল ৩টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত এই প্রাইভেট প্র্যাকটিসের সুযোগ পাবেন। এতে একজন রোগীর বাইরে ডাক্তার দেখাতে যে খরচ হয়, তার চেয়ে কম খরচে ভালো সেবা পাওয়া যাবে। 

আব্দুল্লাহ আল মামুন/আরকে