মালয়েশিয়ায় অপহরণকারীদের হাতে খুন হওয়া প্রবাসী সোহেলের মর‌দেহ তা‌র গ্রা‌মের বা‌ড়ি পৌঁছেছে। শ‌নিবার (১ মার্চ) সকালে অ্যাম্বুলেন্সে করে তার মরদেহ জেলার ঘাটাইল উপজেলার দক্ষিণ ধলাপাড়া গ্রামে নিয়ে যাওয়া হয়। এর আগে রাত ৩টার দিকে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আসে সোহেলের কফিন।

অপহরণকারীদের মুক্তিপণের টাকা দিয়েও ৬ মাস পর ছেলের মরদেহ পেয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন একমাত্র ছেলে হারানো মা আমিনা বেগম ও আত্মীয়স্বজনরা। সেখানে এক হৃদয়বিদারক দৃশ্যের অবতারণ ঘটে। হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও তাদের শাস্তির দাবি জানান স্বজনরা।

জানা গে‌ছে, অল্প বয়সে বাবাকে হারিয়ে সংসারের হাল ধরতে ১৫ বছর আগে মালয়েশিয়ায় পাড়ি জমান টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার দক্ষিণ ধলাপাড়া গ্রামের আহমেদ মিয়ার ছেলে সোহেল। সেখানে একটি কারখানায় কাজ করতেন তিনি। এক ভাই, এক বোনের মধ্যে সোহেল ছিল সবার বড়। গত বছরের ২৫ সেপ্টেম্বর রাতে মালয়েশিয়ার তামিলজায়া এলাকার বাসার কাছ থেকে অপহরণ করা হয় সোহেলকে। মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে ২৭ সেপ্টেম্বর ৫ লাখ টাকা মুক্তিপণও আদায় করেন অপহরণকারীরা। তারপরও মুক্তি না পাওয়ায় মালয়েশিয়ায় দুটি মামলা করেন সোহেলের মামা মিজানুর। মামলার পরিপ্রেক্ষিতে কাজং থানা পুলিশ চার প্রবাসী বাংলাদেশিকে গ্রেপ্তার করে। পরে তাদের দেওয়া স্বীকারোক্তি অনুযায়ী ৬ অক্টোবর কুয়ালালামপুর থেকে ৩০ কিলোমিটার দূরে জায়া ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্ক এলাকার একটি জঙ্গল থেকে ৩৯ বছর বয়সী এই রেমিট্যান্স যোদ্ধার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। অর্ধগলিত মরদেহের হাত ও মুখ টেপ দিয়ে বাঁধা ছিল। ৬ মাস অপেক্ষার পর শনিবার সকালে কফিনে মোড়ানো মরদেহ বুঝে পান স্বজনরা। 

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সাখাওয়াত সেন বলেন, সোহেলকে অপহরণের পর হত্যার ঘটনায় মালয়েশিয়ায় ও বাংলাদেশে মামলা হয়েছে। শনিবার তার মর‌দেহ দেশে এসেছে। হত্যার ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা চলমান রয়েছে।

অভিজিৎ ঘোষ/আরকে