৫৫ ফুট দৈর্ঘ্য ৩০ ফুট প্রস্থ একটি টিনশেড ঘরে আশ্রয়ণের শতাধিক মুসল্লিরা সালাত আদায় করেন। ফ্যান না থাকায় গরমে সালাত আদায়ে কষ্ট হয় তাদের। বিশেষ করে তারাবির সালাতে গরমে ভোগান্তি বেড়ে যায়। এছাড়া আজান দেওয়ার জন্য নেই মাইকের ব্যবস্থা। ঘড়ি দেখে আজান ও সালাত আদায় করতে হয় মুসল্লিদের।

তাই প্রশাসন ও বিত্তবানদের কাছে একটুখানি সহযোগিতার আশা করছেন দিনাজপুরের চিরিরবন্দর উপজেলার ইসবপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ নগর ইয়াকুবপুর বালাডাঙ্গা আশ্রয়ণ পাড়ার মসজিদে সালাত আদায় করতে আসা মুসল্লিরা।

জানা যায়, প্রায় ৩০ বছর আগে তৎকালীন সরকার এখানে ৫০টি পরিবারের জন্য আশ্রয়ণ প্রকল্প তৈরি করে দেন। বর্তমানে আড়াই শতাধিক মানুষের বসবাস সেখানে। শতাধিক মুসল্লি নামাজ আদায় করেন ওই মসজিদে।

মসজিদের মুসল্লি হাসান আলী বলেন, আশ্রয়ণের ঘরে ওঠার পর থেকেই নামাজ আদায়ে ভোগান্তিতে পড়ি। মসজিদ নির্মাণের জন্য কোনো জায়গা ছিল না। প্রায় তিন কিলোমিটার দূরে একটি মসজিদ আছে। সেখানে নামাজ পড়ার জন্য যেতে হতো আমাদের। বছরখানেক আগে আশ্রয়ণের পাশেই এক স্কুল শিক্ষক মসজিদের জন্য জমি দান করেন। এরপর নিজেরাই অর্থ সহায়তা দিয়ে একটি টিনশেড ঘর তৈরি করি। আমরা সবাই দিনমজুরি করে খাই। মসজিদের জন্য মাইক-ফ্যান-টিন কোনার মতো টাকা পয়সা আমাদের নেই। মসজিদে কেউ যদি সহযোগিতা করতো যে কয়েকটি জিনিসের ঘাটতি আছে সেগুলো পূরণ হতো। তাহলে মসজিদে আরামে নামাজ আদায় করা যেত।

মোকসেদ আলী নামের আরেক মুসল্লি বলেন, আগেও আমরা নামাজ পড়তে যেতাম ঘড়ি দেখে এখনও যাই ঘড়ি দেখে। আমাদের আশ্রয়ণ পাড়া থেকে মসজি দূরে হওয়ায় ঠিকমত আজান শুনতে পাই না। আশ্রয়ণে বসবাসের শুরু থেকেই একটা মসজিদ তৈরি করার চেষ্টা চলছিল। মসজিদটা তৈরি হলো কিন্তু মাইক আর ফ্যান লাগাতে পারি নাই। এই গরমে খুব কষ্ট করে ফ্যান ছাড়া তারাবির নামাজ আদায় করা হয়। গরমের চোটে অনেকে দূরে হাট-বাজারের মসজিদে নামাজ পড়ে তারপর বাড়ি ফেরে।

মসজিদরে ইমাম জিয়াউর রহমান বলেন, মসজিদে একটা মাইক জরুরি দরকার। কারণ মানুষ আজান শুনে নামাজ আদায় করতে আসে। কিন্তু এ মসজিদে একটা মাইকও নাই অনেক মানুষ জামাতের নামাজের পড়ে মসজিদে আসে নামাজ আদায় করতে। তারা বলে আজান শুনলে দ্রুত মসজিদে আসা যায় কিন্তু মাইক না থাকায় ভোগান্তি হয়। আবার এখন যে গরম তাতে মসজিদে ফ্যান না থাকায় তারাবি ও জুম্মার নামাজ খুব কষ্টে পড়তে হয়।

মসজিদের সভাপতি শাহাজাহান আলী ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমরা খুব কষ্ট করে সবার সহযোগিতায় টিন দিয়ে আপাতত মসজিদটা তৈরি করেছি। এখনও মাইক ও ফ্যানের ব্যবস্থা করতে পারি নাই। মাইক ও ফ্যান না থাকায় মুসল্লিদের ভোগান্তি পোহাতে হয়। আসলে আশ্রয়ণের সব মানুষ তো দিন আনে দিন খায়, সেখান থেকে একটু একটু করে সবাই মিলে মসজিটা তৈরি করা গেছে। এ ক্ষেত্রে বিত্তবানদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি।

স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবু হায়দার লিটন ঢাকা পোস্টকে বলেন, বালা ডাঙ্গা আশ্রয়ণ পড়ার আশপাশে মসজিদ না থাকায় সেখানকার মুসল্লিদের নামাজ আদায়ে দীর্ঘদিন ধরে ভোগান্তি হত। পরে এক স্কুল শিক্ষক মসজিদের জন্য জায়গা দিলে পরে আমি এমপি স্যারের বরাদ্দ থেকে সেখানে ৭০ হাজার টাকা সহযোগিতা করেছি। মসজিদটি ভালোভাবে তৈরি শুরু করলে আমি আরও সহযোগিতা দিতে চেয়েছি।

ইমরান আলী সোহাগ/আরকে