জামালপুরে মেলান্দহে ট্রাক ও পিকআপ ভ্যানের মুখোমুখি সংঘর্ষে ৩ জন নিহতের ঘটনায় স্বজনদের আহাজারি ও চিৎকারে ভারী হয়ে উঠেছে থানা চত্বর। রোববার (৯ এপ্রিল) ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহগুলো মেলান্দহ থানায় রাখা হয়েছে। এদিন সাড়ে ৬টার দিকে জামালপুর-দেওয়ানগঞ্জ সড়কে উপজেলার (মালঞ্চ) বেতমারী এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

সরেজমিনে থানায় গিয়ে দেখা যায়, স্বামীর মরদেহ দেখতে এসেছেন নিহত কাজলের স্ত্রী শান্তা। তিনি স্বামীর মরদেহ ধরে চিৎকার করে বলছেন, ‘আমি এসেছি তুমি একটু চোখ খুলে দেখ। এই যে তোমার মেয়ে এসেছে।’

নিহতদের সহকর্মী সাব্বির বলেন, রাতে সেহেরি খেয়ে তারা দেওয়ানগঞ্জের একটি টাওয়ারে কাজের জন্য গিয়েছিলেন। কাজ শেষ করে জামালপুর অফিসে ফেরার পথে এ দুর্ঘটনা ঘটে। রাতের বেলায় টাওয়ারে অনেক সময় ব্যাটারি চুরির ঘটনা ঘটে। তাই আমরা রাতে বিভিন্ন টাওয়ার ঘুরে দেখি ব্যাটারিগুলো ঠিক আছে কিনা।

নিহত কাজলের স্ত্রী শান্তা বলেন, আমার সঙ্গে শেষ কথা হয়েছিল রাত তিনটার দিকে। তখন দেওয়ানগঞ্জের কী যেন একটি এলাকার নাম বলেছি ওই জায়গায় ছিল। একটানা সাত দিন ধরে রাতে ডিউটি করতাছে। রাত দিনে শুধু চার ঘণ্টা করে ঘুমাইছে। এখন নাকি পেট্রোল ডিউটি চলতাছিল। আমার দুই বছরের মেয়েকে নিয়ে আমি এখন কী করব।

এ দুর্ঘটনায় নিহতরা হলেন, জামালপুর শহরের বিয়ারা পলাশতলা এলাকার শাহ্ আলম (৩৫), কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার নারিকেলবাড়ী এলাকার চঞ্চল বর্মণ (২৭), জামালপুর সদর উপজেলার শ্রীপুর এলাকার কাজল (৩২)। তারা সবাই গ্রামীণফোনের জামালপুর অফিসের কর্মী ছিলেন। নিহত কাজল পিকআপ ভ্যানচালক, চঞ্চল বর্মণ পাওয়ার টেকনিশিয়ান ও শাহ আলম সিকিউরিটি গার্ড হিসেবে কাজ করতেন।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, রোববার মেলান্দহ উপজেলার বেতমারী ঈদগাহ মাঠের পাশে সকাল সাড়ে ৬টা দিকে দেওয়ানগঞ্জগামী ট্রাক ও জামালপুর শহরগামী পিকআপ ভ্যানের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষের ঘটনার খবর পেয়ে মেলান্দহ ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা পিকআপে থাকা তিনজনকে উদ্ধার করে।

মেলান্দহ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দেলোয়ার হোসেন বলেন, ট্রাক ও পিকআপ ভ্যানের মুখোমুখি সংঘর্ষে তিনজনের মৃত্যু হয়। নিহতের ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হবে।

রকিব হাসান নয়ন/আরকে