রাজশাহীতে টানা ছয় দিন ধরে মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা বিরাজ করছে। এই ছয় দিনে ৩৬ দশমিক ৮ ডিগ্রি থেকে তাপমাত্রা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৮ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। সবশেষ আজ মঙ্গলবার (১১ এপ্রিল) রাজশাহীর সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৮ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

রাজশাহী আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের পর্যবেক্ষকরা বলছেন- রাজশাহী অঞ্চলের ওপর দিয়ে মৃদু তাপপ্রবাহ বয়ে চলছে। এ কারণে মূলত রাজশাহীর তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এমন অবস্থায় বৃষ্টিপাত না হওয়া পর্যন্ত তাপমাত্রা কমার সম্ভাবনা নেই। তবে অতি সামান্য বৃষ্টিপাত হলে ভ্যাপসা গরম বাড়তে পারে।

আবহাওয়া সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, সোমবার (১০ এপ্রিল) রাজশাহীর সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৮ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তার আগের দিন রোববার ৩৮ দশমিক ১ ডিগ্রি, শনিবার ৩৮ ডিগ্রি, শুক্রবার ৩৭ দশমিক ৫ ডিগ্রি ও বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ৩টায় রাজশাহীর সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৬ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

রাজশাহী আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের পর্যবেক্ষক লেতিফা হেলেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, গত ছয় দিন থেকে রাজশাহীতে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা বিরাজ করছে। আজও সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৮ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বৃষ্টি না হওয়া পর্যন্ত তাপমাত্রা আরও বাড়তে পারে।

এদিকে, তাপমাত্রা বৃদ্ধির ফলে নিম্ন আয়ের খেটে খাওয়া মানুষজন চরম দুর্ভোগে পড়েছেন। জীবিকার তাগিদে রোদ-গরম উপেক্ষা করে তপ্ত সড়কে খোলা আকাশের নিচে কাজ করতে হচ্ছে। মাথার ঘাম পায়ে ফেলে কেউ ভ্যান টানছেন, কেউ শ্রমিকের কাজ করছেন। কেউ বা কৃষি কাজ করছেন।

রাজশাহী নগরীর বুধপাড়ায় পাঁচ বিঘা জমিতে ধানের চাষ করেছেন সিরাজুল ইসলাম। তিনি তার জমিতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ড্রেন থেকে সেচ দেন। ধান বপনের শুরু থেকে তিনি দুই দিন পর পর সেচ দিতেন। কিন্তু গত কয়েক দিন থেকে তাকে প্রতিদিন ধানের জমিতে সেচ দিতে হচ্ছে।

সিরাজুল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, সকালে সেচ দিলে পরের দিন এসে আর পানি দেখা যাচ্ছে না। এখন প্রতিটি ধানে শীষ চলে এসেছে। এখন পানি কম পেলে ধানে চিটা হয়ে যাবে। এমনিতে এই ধান করতে অনেক খরচ হয়। উপায় নেই, প্রতিদিন সেচ দিতেই হবে।

নাজমুল ইসলাম নামে আরেক চাষি জানান, প্রতিটি ধানে শীষ চলে এসেছে। পানি কম হলে ধানে চিটা হয়ে যাবে। এছাড়া জমিতে পানি না থাকার কারণে ইঁদুরের আক্রমণ বেড়েছে। আল্লাহ বৃষ্টি না দিলে আমাদের এই সমস্যা সমাধান হবে না।

রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোজদার হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, ধানের জমিতে সেচ দিতে হবে। সেচের বিকল্প নেই। আমরা কৃষকদের বিভিন্ন পরামর্শ দিচ্ছি।

শাহিনুল আশিক/এমজেইউ