পালং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কে এম আজহার হোসেন

শরীয়তপুর সদর উপজেলার পালং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কে এম আজহার হোসেনের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব দিয়েছেন পরিষদের নয়জন সদস্য।

বৃহস্পতিবার (১৩ এপ্রিল) দুপুরে শরীয়তপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বরাবর এ অনাস্থা প্রস্তাব দেওয়া হয়। লিখিত প্রস্তাবটিতে চেয়ারম্যান কে এম আজহার হোসেনের বিরুদ্ধে ইউপি সদস্যদের স্বাক্ষর জালিয়াতিসহ কয়েকটি অভিযোগ করা হয়েছে। অনাস্থা প্রস্তাবের অনুলিপি স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী, সচিব ও শরীয়তপুর জেলা প্রশাসককেও পাঠানো হয়।

অনাস্থা প্রস্তাবের লিখিত সূত্রে জানা যায়, চেয়ারম্যান কে এম আজহার হোসেন ইউপি সদস্যদের সঙ্গে কোনো প্রকার সমন্বয় না করে টিসিবি, হোল্ডিং ট্যাক্স, বয়স্ক ভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতাসহ পরিষদের উন্নয়নমূলক কার্যক্রমে সদস্যদের স্বাক্ষর জালিয়াতি করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বুঝিয়ে দেন।

অনাস্থা প্রস্তাবে আরও বলা হয়, চেয়ারম্যানের প্রতি সদস্যরা যেন অনাস্থা প্রস্তাব আনতে না পারেন সেজন্য মিটিংয়ে সদস্যদের স্বাক্ষর জালিয়াতি করে মিটিং বাস্তবায়ন করেছেন চেয়ারম্যান। ইউপি আইন অনুযায়ী পর পর তিনটি মিটিং সম্পর্কে সদস্যদের অবগতি না করলে বা উপস্থিতি নিশ্চিত না করলে চেয়ারম্যানের উপর অনাস্থা দিতে পারেন সদস্যরা। কিন্তু স্বাক্ষর জালিয়াতি করায় অনাস্থা প্রস্তাব আনতেও সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন সদস্যরা।

প্রস্তাবে উল্লেখ করা হয়, জনগণের ভোটে নির্বাচিত প্রতিনিধি হওয়ায় পরিষদের কার্যক্রম নিয়ে সদস্যরা অহরহ জনগণের কাছে প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছেন।

অনাস্থা প্রস্তাবে স্বাক্ষর করেছেন পালং ইউনিয়ন পরিষদের সংরক্ষিত মহিলা সদস্য মিনু আক্তার, মালেকা বানু ও শিরিনা আক্তার। সাধারণ ওয়ার্ডের ১নং সদস্য মো. সেলিম শেখ, ২নং সদস্য মনসুর পেদা, ৩নং সদস্য ছিদাম মোল্লা, ৫নং সদস্য মকফর উদ্দিন শেখ, ৬নং সদস্য আনোয়ার হোসেন সরদার ও ৭নং সদস্য মিজানুর রহমান মিলু।

অনাস্থা প্রস্তাবে স্বাক্ষরকারী সংরক্ষিত ৩নং ওয়ার্ডের শিরিনা আক্তার ঢাকা পোস্টকে বলেন, আজহার চেয়ারম্যানের সঙ্গে পরিষদ পরিচালনা করা সম্ভব নয় বলেই অনাস্থা প্রস্তাব দিয়েছি।

৫নং সদস্য মকফর উদ্দিন শেখ ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমি পাঁচবারের নির্বাচিত ইউপি সদস্য। এর আগে এমন চেয়ারম্যান আর দেখিনি। চেয়ারম্যান আমাদের সঙ্গে সমন্বয় না করে পরিষদের সকল কাজ পরিচালনা করেন। প্রয়োজনে তিনি স্বাক্ষরও জাল করেন। জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়েছি সেবা করার জন্য। কিন্তু আজহার চেয়ারম্যানের সঙ্গে তা সম্ভব নয় বলেই অনাস্থা প্রস্তাবে স্বাক্ষর করেছি। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা নির্দেশনা দেবেন বলে আশা করছি।

অনাস্থা প্রস্তাবের বিষয়ে পালং ইউপি চেয়ারম্যান কে এম আজহার হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, সম্পূর্ণ মিথ্যা অভিযোগ এনে আমার প্রতি অনাস্থা দিয়েছেন তারা। কার্ড নিয়ে সদস্যরা ঝামেলা করে এই কাজ করেছেন। এলাকার সবাই আমার ও আমার পরিবার সম্পর্কে জানেন।

এ বিষয়ে শরীয়তপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জ্যোতি বিকাশ চন্দ্র ঢাকা পোস্টকে বলেন, পালং ইউনিয়নের সংরক্ষিত ও সাধারণ ওয়ার্ডের নয়জন সদস্য চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ এনে একটি অনাস্থা প্রস্তাব জমা দিয়েছেন। অনাস্থা প্রস্তাবটির বিষয়ে ইউনিয়ন পরিষদ আইন অনুযায়ী তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এমজেইউ