সারা দেশের মতো শরীয়তপুরের ওপর দিয়েও বয়ে যাচ্ছে তীব্র তাপপ্রবাহ। এর কারণে তীব্র গরমে ধান ও আমের গুটি নষ্ট হয়ে যেতে পারে বলে জানিয়েছেন শরীয়তপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. রবীআহ নূর আহম্মেদ।

শনিবার (১৫ এপ্রিল) বিকেল ৪টার দিকেও শরীয়তপুরের তাপমাত্রা ছিল ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আগামী কয়েকদিন একই তাপমাত্রা থাকবে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।

শরীয়তপুরে আবহাওয়া অধিদপ্তরের অফিস নেই। এ কারণে ঢাকা থেকে কৃষি বিভাগকে নিয়মিত তথ্য জানায় অধিদপ্তরটি। এদিকে, তাপমাত্রা বেশি হওয়ায় শরীয়তপুরের প্রধান ফসল ধানসহ অন্যান্য ফসল নষ্ট হয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করছে কৃষি বিভাগ।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, ১০ এপ্রিল থেকে ১৮ এপ্রিল পর্যন্ত জেলায় মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাবে। তাপপ্রবাহ থেকে ফসল রক্ষায় কৃষকদের মধ্যে কৃষি বিভাগ প্রচারপত্র বিলি করছে। প্রচারপত্রে তাপপ্রবাহে ফসলের কী ধরনের রোগ হতে পারে তা চিত্রসহ দেখানো হয়েছে। তাপপ্রবাহে হিটশক রোগ হয় ধান গাছের। হিটশক রোগের লক্ষণ হলো– আক্রান্ত ধান গাছের পাতায় প্রথমে ছোট ছোট কালচে বাদামি দাগ দেখা যায়, ধীরে ধীরে দাগগুলো বড় হয়ে ধূসর বা সাদা ও পাতার কিনারা বাদামি রঙ ধারণ করে। অনেকটা চোখের মতো দেখতে দাগগুলো লম্বাটে হয়। একাধিক দাগ একসঙ্গে মিশে শেষ পর্যন্ত পুরো পাতাসহ গাছ মারা যেতে পারে।

কৃষি বিভাগ নিয়মিত কৃষকদের সঙ্গে গাছের ছায়ায় বৈঠক করে তাপপ্রবাহ থেকে ফসল বাঁচাতে পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছে। বৈঠক থেকে ফসল রক্ষার্থে তাপপ্রবাহের ক্ষতি থেকে ধান রক্ষার জন্য বোরো ধানের জমিতে ধানের ফুল থেকে ধান শক্ত না হওয়া পর্যন্ত গাছের গোড়ায় অবশ্যই ২ থেকে ৩ ইঞ্চি পরিমাণ পানি রাখতে বলছে। আম গাছের গোড়ায় সকাল-বিকেল পর্যাপ্ত সেচ প্রদান করতে হবে। প্রয়োজনে গাছের শাখা-প্রশাখায় পানি স্প্রে করতে হবে। সবজি-ফসলি জমিতে বিকেলে মাটি ও ফসলের ধরন বুঝে সেচের ব্যবস্থা করতে হবে। ফল ও সবজির চারা তাপ থেকে রক্ষা করতে মালচিং ও সেচ দিতে হবে।

সদর উপজেলার বালুচরা গ্রামের ধান চাষি আমান আহমেদ ঢাকা পোস্টকে বলেন, এত তাপ আগে দেখিনি। গরমে আমার বোরো ধান নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। কৃষি অফিসার নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন, পরামর্শ দিচ্ছেন। কিন্তু তাতে কি হবে। আল্লাহ যে গরম দিয়েছেন তা আল্লাহ বৃষ্টি দিয়ে কমিয়ে না দিলে ফসল নষ্ট হবেই। তবু কৃষি অফিসারের পরামর্শে যতটুকু রক্ষা করতে পারি চেষ্টা করছি।

শরীয়তপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. রবীআহ নূর আহম্মেদ ঢাকা পোস্টকে বলেন, জেলায় আবহাওয়া অধিদপ্তরের অফিস নেই বলে ঢাকার আবহাওয়া অধিদপ্তর থেকে আমরা নিয়মিত তথ্য সংগ্রহ করে কৃষকদের কাছে পৌঁছে দেই। তাপপ্রবাহ থেকে ফসল রক্ষার্থে কৃষকদের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। রমজানে রোজা রেখে কৃষকের খুব কষ্ট হচ্ছে ফসল রক্ষার কাজ করতে।

/এসএসএইচ/