দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সঙ্গে রাজধানীর যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া এবং মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া নৌপথ। কিন্তু পদ্মা সেতু উদ্বোধনের পর থেকেই বদলে গেছে রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ঘাটের দৃশ্যপট। ব্যস্ততম সেই ঘাটে এখন নেই কোনো যানজট। কোনো ধরনের ভোগান্তি ছাড়াই ঘরমুখী মানুষ সরাসরি ফেরি পার হয়ে তাদের গন্তব্যে পৌঁছে যাচ্ছে।

বৃহস্পতিবার (২০ এপ্রিল) ঘাটে অবস্থান করে দেখা যায়, ফেরিঘাটের যাত্রী ও যানবাহনের চাপ কম থাকলেও লঞ্চঘাটে রয়েছে ঘরমুখী মানুষের চাপ। যা গতকালের থেকে কিছুটা বেশি। এদিকে ঘাট এলাকার নিরাপত্তা নিশ্চিতে কাজ করছে পুলিশ। এছাড়া সাদা পোশাকেও পুলিশ মাঠে রয়েছে।

ঘাট সংশ্লিষ্টরা জানান, এবারের ঈদযাত্রায় যাত্রী ও যানবাহন পারাপার নির্বিঘ্ন করতে ২০টি ফেরি ও ৩৩টি লঞ্চ চলাচল করছে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে। সেই সঙ্গে ঘাটকে যানজটমুক্ত রাখতে ঈদের আগে তিন দিন ও পরের তিন দিন ট্রাক পারাপার বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। এবারের ঈদে কোনো ধরনের ভোগান্তি ছাড়াই মানুষ ঘরে ফিরতে পারছে।

পরিবার-পরিজনের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে ঘরমুখী মানুষ যাতে স্বস্তিতে বাড়ি ফিরতে পারে সেজন্য নানা উদ্যোগ নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। যাত্রাপথে ভোগান্তি, যাত্রীদের থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় না করা, সড়কে যানজট নিরসনসহ ঘাট এলাকায় সার্বক্ষণিক কঠোর নজরদারি করছে প্রশাসন।

উত্তরা থেকে আসা মাগুরাগামী ঈদযাত্রী আ. সালাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, লোকাল বাসে কোনো ধরনের ভোগান্তি ছাড়াই পাটুরিয়া ঘাট পর্যন্ত এসে লঞ্চে নদী পার হয়েছি। ভেবেছিলাম ঘাটে অনেক যানজটে থাকবে। কিন্তু ঘাটে এসে অপেক্ষা করতে হয়নি। সরাসরি লঞ্চে নদী পার হয়ে চলে এসেছি। এখন ঘাট থেকে লোকাল গাড়িতে মাগুরা পর্যন্ত যাব। কিন্তু তীব্র গরমে হাঁপিয়ে উঠেছি।

গাজীপুর থেকে পরিবার নিয়ে পাংশায় ঈদ করতে যাচ্ছেন মোসলেম শেখ। তিনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, ঈদযাত্রা এত স্বস্তির হবে কখনো ভাবিনি। কোনো প্রকার ভোগান্তি ছাড়াই দৌলতদিয়া পর্যন্ত এসেছি। তবে যানবাহনগুলোতে অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়া হচ্ছে। এই বিষয়ে প্রশাসনের নজরদারি বাড়ানো দরকার।

দৌলতদিয়া নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ জে এম সিরাজুল কবির ঢাকা পোস্টকে বলেন, ঈদে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের যাত্রীদের জন্য অতিরিক্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। নদীতে নৌ-পুলিশের টহল রয়েছে। আমরা ঈদে ঘরমুখী মানুষের যাত্রা নির্বিঘ্ন করতে ঘাটে সব সময় টহলে রয়েছি।

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশনের (বিআইডব্লিউটিসি) দৌলতদিয়া ঘাট শাখার ব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) মো. সালাহ উদ্দিন ঢাকা পোস্টকে বলেন, দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে বর্তমানে ছোট-বড় মিলিয়ে ২০টি ফেরি যাত্রী ও যানবাহন পারাপারে চলাচল করছে। ঈদে ঘরমুখী মানুষ যেন কোনো ভোগান্তি ছাড়াই স্বস্তিতে বাড়ি পৌঁছাতে পারে সে ব্যাপারে সার্বক্ষণিক কাজ করে যাচ্ছি।

তিনি আরও বলেন, বর্তমানে তিনটি ঘাট দিয়ে যানবাহন পারাপার করা হচ্ছে। তিনটি ঘাটে রয়েছে ছয়টি পকেট। এই ছয় পকেটে ছয়টি ফেরি ভিড়তে পারছে।

মীর সামসুজ্জামান/এমজেইউ