রাসেল খান

গত ৯ বছর ধরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদকের পদে রয়েছেন রাসেল খান। ক্ষমতাসীন দলের সহযোগী সংগঠনের পদধারী নেতা হয়েও তিনি সরকারি চাকরি করছেন। ২০১২ সালে দলীয় পদে থেকে তিনি উপজেলার পাহাড়পুর ইউনিয়নের পরিবার পরিকল্পনা পরিদর্শক হিসেবে যোগদান করেন। 

এর দুই বছর পর রাসেল খান হয়ে যান উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক। এরই মাঝে তিনি বিয়ে করেন। সেই বিয়েতে জেলা আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাকে উকিল শ্বশুর বানিয়ে তিনি হয়ে ওঠেন আরও ক্ষমতাশালী।

দীর্ঘদিন ধরে রাসেল খান সরকারি চাকরি বিধিমালা অমান্য করে সরকারি চাকরির পাশাপাশি উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক পদে রয়েছেন। এবার আগামী ২৮ এপ্রিল অনুষ্ঠিতব্য বিজয়নগর উপজেলা যুবলীগের সম্মেলনে সভাপতি প্রার্থী হয়েছেন তিনি।

সরকারি কর্মচারী (আচরণ) বিধিমালা ১৯৭৯- এর রাজনীতি ও নির্বাচনে অংশগ্রহণ অংশে বলা আছে, সরকারি কর্মচারী কোনো রাজনৈতিক দলের বা রাজনৈতিক দলের কোনো অঙ্গ সংগঠনের সদস্য হতে অথবা অন্য কোনোভাবে যুক্ত হতে পারবেন না। বাংলাদেশ বা বিদেশে কোনো রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ করতে বা কোনো প্রকারের সহায়তা করতেও পারবেন না।

অথচ বিজয়নগর উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক রাসেল খান উপজেলার পাহাড়পুর ইউনিয়ন পরিবার পরিকল্পনা পরিদর্শক পদে ২০১২ সাল থেকে চাকরিরত আছেন। ওই সময়ে উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক পদে থেকে তিনি চাকরিতে যোগদান করেন। সরকারি চাকরি পাওয়ার দুই বছর পর ২০১৪ সালে সম্মেলনের মাধ্যমে রাসেল খান উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। এরপর থেকে সরকারি চাকরির পাশাপাশি গত ৯ বছর যাবত উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক পদে আছেন তিনি। 

এদিকে ক্ষমতাসীন দলের সহযোগী সংগঠনের নেতা হওয়ায় তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়নি পরিবার পরিকল্পনা বিভাগ। আগামী ২৮ এপ্রিল উপজেলা যুবলীগের সম্মেলনের তারিখ ঘোষণা করেছে জেলা যুবলীগ। সেই সম্মেলনে প্রকাশ্যে পোস্টার-ব্যানার করে নিজেকে সভাপতি প্রার্থী ঘোষণা করেছেন পরিবার পরিকল্পনা পরিদর্শক ও  উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক রাসেল খান।

এ বিষয়ে রাসেল খান বলেন, দীর্ঘদিন যাবত চাকরি করে আসছি। দলের তো কোনো বাধা নেই। 

এ বিষয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সিরাজুল ইসলাম ফেরদৌস বলেন, রাসেল খান যুবলীগ করেন এটা সবাই জানেন। সরকারি চাকরি করে যুবলীগ করা যাবে না, গঠনতন্ত্রে এমন নিয়ম নেই। সরকারের নিয়মের বিষয়টি সরকার দেখবে। আমাদের বাধা নেই।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয়ের উপপরিচালক মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, সরকারি চাকরি করে রাজনৈতিক দলের পদে থাকার কোনো সুযোগ নেই। রাসেল খানের বিষয়ে কেউ জানাননি। লিখিত অভিযোগ দিলে ঢাকায় পাঠাব।

বাহাদুর আলম/আরএআর