লক্ষ্মীপুর সড়ক ও জনপথ বিভাগের স্টাফ কোয়ার্টার থেকে মমতাজ বেগম (৫৫) নামে এক নারীর বিবস্ত্র ও খণ্ডিত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। তাকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছে। কসাই যেভাবে মাংস কাটে সেভাবে তার দুই হাত ও দুই পা কাটা হয়েছে। 

মঙ্গলবার (২৫ এপ্রিল) দুপুরে ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে পুলিশ সুপার (এসপি) মাহফুজ্জামান আশরাফ সাংবাদিকদের এসব কথা জানান। নিহত মমতাজের ছোট ছেলে সাইফুল ইসলাম রকিকে খুঁজে পেলে হত্যার রহস্য উদঘাটন হবে বলে জানান তিনি। 

পুলিশ সুপার জানান, স্টাফ কোয়ার্টারটিতে রক্ত দেখা গেছে বলে রাতে ৯৯৯ এ কল আসে। এতে সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোসলেহ উদ্দিনের নেতৃত্বে একটি টিম ঘটনাস্থলে আসে। বাসার সামনের দরজা বন্ধ ছিল। এতে স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় পেছনের দরজা দিয়ে বাসায় ঢোকে পুলিশ। দরজায় মাংসের টুকরো পড়ে ছিল। তখনও বুঝা যায়নি সেটি কিসের মাংস ছিল। পরে একটি পাটি দিয়ে ঢাকা অবস্থায় মমতাজের বেগমের শরীরের কাটা অংশ দেখতে পাওয়া যায়। তাকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছে। কসাই যেভাবে মাংস কাটে, সেভাবে তার দুই হাত ও দুই পা কাটা হয়েছে। 

মমতাজের বড় ছেলে শরীফুল ইসলাম বাপ্পীসহ স্থানীয়দের বরাত দিয়ে পুলিশ সুপার জানান, চন্দ্রগঞ্জ থানাধীন কুশাখালী গ্রামের বাড়িতে মমতাজ ও তার বড় ছেলে বাপ্পী ঈদ করতে যান। কিন্তু ছোট ছেলে রকি সেখানে ঈদ করতে যাননি। তিনি এই কোয়ার্টারেই ছিলেন তিনদিন ধরে। ছোট ছেলের সঙ্গে মমতাজের মনোমালিন্য ছিল। সোমবার (২৪ এপ্রিল) সকাল ১০টা থেকে ১১টার দিকে বড় ছেলে মাকে বাসে উঠিয়ে দেন এখানে আসার জন্য। কিন্তু তখন বড় ছেলে আসেননি। এখানে ছোট ছেলে ছিল।

পুলিশ সুপার জানান, মমতাজ এখানে আসার পরপরই ঘটনা ঘটেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তার ছোট ছেলেকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। মোবাইলটিও বন্ধ রয়েছে। বাপ্পীও তার ছোট ভাইয়ের সন্ধান দিতে পারেননি। ঘটনাটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। কী কারণে হত্যাকাণ্ডটি হয়েছে, কারা ঘটিয়েছে অচিরেই তা বের হয়ে আসবে। মমতাজের দুই মেয়ে আছে, তাদেরকে জিজ্ঞাসা করা হবে। তার ছোট ছেলেকে খুঁজে বের করার চেষ্টা চলছে। তাকে খুঁজে পেলে রহস্য উদঘাটন হবে।

এ সময় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এ বি ছিদ্দিক ও মংনেথোয়াই মারমা উপস্থিত ছিলেন।

পুলিশ জানায়, নিহত মমতাজ বেগম লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার কুশাখালী ইউনিয়নের মৃত আব্দুল মতিনের স্ত্রী। তার স্বামী সড়ক বিভাগে চাকরি করতেন। স্বামী মতিন মারা যাওয়ার পর থেকেই মমতাজ তার দুই ছেলে বাপ্পী ও রকিকে নিয়ে সড়ক বিভাগের স্টাফ কোয়ার্টারে বসবাস করে আসছেন। তার বড় ছেলে বাপ্পী বর্তমানে মাস্টাররোলে সড়ক বিভাগে কাজ করছে।

হাসান মাহমুদ শাকিল/আরএআর