বাগেরহাটে জালিয়াতির মাধ্যমে বিভিন্ন কাগজপত্র তৈরি এবং আত্মসাতের উদ্দেশ্যে সরকারি টাকা গ্রহণের মামলায় ফকিরহাট কারামতিয়া ফাজিল মাদরাসার অধ্যক্ষ এ বি এম আব্দুল মান্নানকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত।

মঙ্গলবার (২৫ এপ্রিল) দুপুরে আদালতে হাজির হয়ে জামিন আবেদন করলে বাগেরহাটের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ওসমান গনি জামিন না মঞ্জুর করে তাকে কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ দেন।

মামলা সূত্রে জানা যায়, সমাজসেবা অধিদপ্তর থেকে ২০১৭-১৮ এবং ১৮-১৯ অর্থবছরে কারামতিয়া এতিমখানা ও লিল্লাহ বোর্ডিংয়ের এতিম শিশুদের ব্যয় বাবদ এতিমখানার ব্যাংক হিসেবে এক লাখ ১৯ হাজার ২৫০ টাকা প্রদান করা হয়। কিন্তু ওই সময়ে এতিমখানায় কোনো এতিম ছিল না। ভুয়া বিল-ভাউচার ও কাগজপত্র তৈরি করে টাকা আত্মসাতের উদ্দেশ্যে মাদরাসার অধ্যক্ষ এ বি এম আব্দুল মান্নান সমাজসেবা অধিদপ্তরে জমা দিয়েছেন এমন অভিযোগ এনে ২০১৯ সালের ৩০ জুন বাগেরহাট আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন ফকিরহাট উপজেলার মোল্লা আনিসুর রহমান রাসেল নামের এক ব্যক্তি। আদালত অভিযোগটি আমলে নিয়ে ফকিরহাট থানা পুলিশকে তদন্তের নির্দেশ দেন। তদন্ত শেষে ফকিরহাট থানা পুলিশ বাদীর অভিযোগ সত্য নয় মর্মে আদালতে প্রতিবেদন দেন।

পরবর্তীতে বাদীর আবেদনের প্রেক্ষিতে আদালত বাগেরহাটের পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) অধিকতর তদন্তের নির্দেশ দেন। দীর্ঘ তদন্ত শেষে ২০২৩ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি ভুয়া ও জাল ভাউচার তৈরি হয়েছে মর্মে আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দেয় পিবিআই। তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর আদালত মামলার একমাত্র আসামি অধ্যক্ষ এ বি এম আব্দুল মান্নানের বিরুদ্ধে সমন জারি করেন। অধ্যক্ষ এ বি এম আব্দুল মান্নান উচ্চ আদালত থেকে ৬ সপ্তাহের আগাম জামিন নেন। ৬ সপ্তাহ শেষে আজ নিম্ন আদালতে জামিন আবেদন করলে আদালত তাকে কারাগারে প্রেরণের আদেশ দেন।

মামলায় বাদীপক্ষে আইনজীবী ছিলেন সৈয়দ আলমগীর হোসেন মুকুল ও কাজী ইয়াছিন। আসামিপক্ষে আইনজীবী ছিলেন আব্দুল ওয়াদুদ।

বাদীপক্ষের আইনজীবী কাজী ইয়াছিন বলেন, পিবিআইয়ের তদন্তে জালিয়াতি ও ভুয়া ভাউচার তৈরির বিষয়ে সত্যতা পাওয়ায় আদালত তার বিরুদ্ধে সমন জারি করেন। পরে অধ্যক্ষের নামে ওয়ারেন্টও জারি হয়। আজকে জামিন নিতে গেলে আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

এমজেইউ