মাদারীপুরের রাজৈরে দুদক পরিচয়ে ভয় দেখিয়ে সরকারি কর্মকর্তাদের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নেওয়া চক্রের মূলহোতা আসাদুজ্জামান মীর (৩৪) ও তার সহযোগী আনিসুর রহমান বাবুলকে (৩২) আটক করেছে গোয়েন্দা পুলিশ। এ সময় তাদের কাছ থেকে তিনটি মোবাইল, ২২টি সিম কার্ড ও নগদ ৯১ হাজার ৩০০ টাকা জব্দ করা হয়। 

মঙ্গলবার (২৫ এপ্রিল) বিকেলে রাজৈর উপজেলার লুনদী এলাকা থেকে আনিসুর রহমান ওরফে বাবুল ও এই চক্রের মূলহোতা সৈয়দ আমান মীরকে গ্রেপ্তার করে মাদারীপুর জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখা। বুধবার (২৬ এপ্রিল) বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান মাদারীপুর জেলা পুলিশ সুপার মাসুদ আলম। 

সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার জানান, তাদের প্রতারণাই নেশা এবং পেশা। এ জন্য কখনো হন দুদক কর্মকর্তা, কখনো অন্য বড় কোনো প্রশাসনের কর্মকর্তা। তারা প্রতারণার অভিযোগে একাধিকবার কারাগারে গেছেন। গত ৬ মার্চ গোয়েন্দা পুলিশের হাতে ধরা পড়েছিলেন আনিসুর রহমান বাবুল। তারপর তাকে জেলে পাঠানো হয়েছিল। এরপর জামিনে বের হন। বের হতে না হতেই ফের প্রতারণা শুরু করেন বাবুল। এবার তাকেসহ প্রতারণাচক্রের মূলহোতাকে গ্রেপ্তার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ।

মাসুদ আলম আরও বলেন, সৈয়দ আমান মীর ও আনিসুর রহমান দুর্ধর্ষ দুই প্রতারক। তারা দুদক কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে ভয়ভীতি দেখিয়ে বিভিন্ন সময় মানুষকে প্রতারিত করেছে। তাদের মূল টার্গেট ছিল সমাজের বিশিষ্ট মানুষ, ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তা ও প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী। এদের মধ্যে চক্রের সদস্য সৈয়দ আমান মীর প্রতারণার মাধ্যমে একজন ব্যক্তির কাছ থেকে ১০ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। এ ছাড়াও বিভিন্ন সময় আরও লোকের কাছ থেকে অর্থ নিয়েছে। আমাদের কাছে অভিযোগ আসার পরে তাদের বিরুদ্ধে আমাদের গোয়েন্দা পুলিশের বিশেষ শাখা অভিযানে নামে। পরবর্তীতে প্রযুক্তির সহায়তায় তাদের গ্রেপ্তার করি।

মাসুদ আলম আরও বলেন, 'অবাক করার বিষয় হচ্ছে, আনিসুর রহমান ওরফে বাবুলকে আমরা গত দেড় মাস আগেও গ্রেপ্তার করেছিলাম। যার বিরুদ্ধে এখনো সাতটি মামলা চলমান। তিনি জামিনে বের হয়ে একই প্রতারণার কাজে লিপ্ত হয়েছেন।

মাদারীপুর জেলা গোয়েন্দা শাখার তদন্ত কর্মকর্তা রায়হান সিদ্দিকী শামীম বলেন, 'প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তাদের সঙ্গে এই চক্রের আরও সদস্য থাকার কথা স্বীকার করেছে। তাদের ধরতে আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।'

রাকিব হাসান/আরকে