ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জে হেযবুত তওহীদ ও ইত্তেফাকুল উলামার মুসল্লিদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। বুধবার (২৬) বিকেলে উপজেলার উচাখিলা এলাকায় ঘটা এ সংঘর্ষে অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন। পরে এ সংঘর্ষের জেরে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যানের বাড়িসহ পাঁচটি বাড়িতে ভাঙচুর করা হয়।

জানা গেছে, হেযবুত তাওহীদ নামের একটি ধর্মীয় সংগঠন ২০১৭ সাল থেকে ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলায় কাজ করছে। এ সংগঠনটির ওই উপজেলা শাখার সভাপতির দায়িত্বে আছেন মোহাম্মদ নাজমুল ইসলাম। নিজেদের সদস্য বৃদ্ধি ও নিজেদের চেতনা ছড়িয়ে দিতে সংগঠনটি এলাকাভিত্তিক নানা কর্মসূচি পালন করে আসছিল। তারা পুরুষ সদস্য সংগ্রহের পাশাপাশি নারীদেরকেও উদ্বুদ্ধ করে হেযবুত তাওহীদের আদর্শে পরিচালিত করে আসছে। কিন্তু সম্প্রতি সংগঠনটির কার্যক্রম নিয়ে স্থানীয় মুসল্লিদের মধ্যে বিরূপ ধারণা তৈরি হয়। হেযবুত তাওহীদ ইসলাম বিরোধী কার্যক্রম পরিচালনা করে এমন অভিযোগ তুলে এলাকার বিভিন্ন জায়গায় লিফলেট ও পোস্টার সাঁটানো হয়। সেখানে ইসলাম বাঁচাতে হেযবুত তাওহীদ বিরোধী কর্মসূচিতে অংশ নিতে আহ্বান জানানো হয়।  

বিগত কিছুদিন ধরে বিষয়টি এলাকায় প্রচার হতে শুরু করলে হেযবুত তাওহীদ নেতাকর্মীদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়। এর মধ্যে ইত্তেফাকুল উলামা বৃহত্তর মোমেনশাহীর উচাখিলা শাখার উদ্যোগে হেযবুত তাওহীদের অপতৎপরতার বিরুদ্ধে কর্মসূচির ডাক দেয়। বুধবার বিকেল ৩টায় উচাখিলা পাট বাজারে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করা হয়। সমাবেশ শেষে মিছিলটি বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে লক্ষ্মীগঞ্জ রোডে যেতেই হেযবুত তাওহীদ ও ইত্তেফাকুল উলামা নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে উভয় পক্ষের অন্তত ২০ নেতাকর্মী আহত হন। আহতদের মধ্যে ৮ জনকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। 

পুলিশ ও স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান দুপক্ষকে শান্ত করার চেষ্টা করলেও দফায় দফায় সংঘর্ষ চলে। রাজিবপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান একেএম মুদাব্বিরুল ইসলামের বাসাসহ হেযবুত তাওহীদ সমর্থন করে এমন আরও পাঁচটি বাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে।  

ইত্তেফাকুল উলামার উচাখিলা শাখার সাধারণ সম্পাদক মাওলানা আখতারুজ্জামান বলেন, হেযবুত তাওহীদ ইসলাম বিরোধী কার্যক্রম পরিচালনা করায় সাধারণ মানুষকে সুপথে ফেরাতে কর্মসূচি করা হয়। সভা শেষে মিছিল শুরু করতেই তাওহীদের নেতাকর্মীরা হামলা চালায়। এতে আমাদের ১৫ জনের বেশি নেতাকর্মী আহত হয়েছেন।   

হেযবুত তাওহীদের ঈশ্বরগঞ্জে উপজেলা শাখার সভাপতি মোহাম্মদ নাজমুল ইসলাম বলেন, ধর্মের দোহাই দিয়ে যারা সন্ত্রাসবাদ করে সেসবের বিরুদ্ধে হেযবুত তাওহীদের প্রচারণা। গত কিছুদিন ধরে একটি চক্র এলাকায় হেযবুত তাওহীদ বিরোধী প্রচারণা চালাচ্ছিল। বুধবার তারা যে এলাকায় অবস্থান করছিলেন সে এলাকায় মুসল্লিরা হামলার জন্য গেলে তারা প্রতিহত করেন। এ সময় তাদের বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী আহত হন। বাড়ি ঘর ভাঙচুর করা হয়।  

ঈশ্বরগঞ্জ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাছিনুর রহমান বলেন, পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেওয়ায় সংঘাত বড় হয়নি। এ ঘটনায় হতাহতের কোনো তথ্য আমাদের কাছে নেই। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়ন রয়েছে।

উবায়দুল হক/আরকে