মোখা মোকাবিলায় কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কর্মস্থলে থাকার নির্দেশ
ঘূর্ণিঝড় মোখাকে কেন্দ্র করে নোয়াখালী জেলার অধীন সব দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীকে কর্মস্থলে থাকার নির্দেশনা দিয়েছেন জেলা প্রশাসক দেওয়ান মাহবুবুর রহমান।
বৃহস্পতিবার (১১ মে) বিকেলে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত দেওয়া হয়েছে।
বিজ্ঞাপন
বঙ্গোপসাগরে গভীর নিম্নচাপ থেকে ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নেওয়া ‘মোখা’ বর্তমানে যে গতিতে এগোচ্ছে সেভাবে এগোলে রোববার (১৪ মে) এটি নোয়াখালী উপকূলে আঘাত হানবে। এমন আশঙ্কার কথা জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। এজন্য নোয়াখালীসহ দেশের সব সমুদ্র বন্দরকে দুই নম্বর দূরবর্তী হুঁশিয়ারি সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়ার কথা জানিয়েছে নোয়াখালী জেলা প্রশাসন।
ঘূর্ণিঝড় মোখার ক্ষতি এড়াতে নোয়াখালীতে ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে বলে উল্লেখ করেন জেলা প্রশাসক ও জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি দেওয়ান মাহবুবুর রহমান।
বিজ্ঞাপন
তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত অবশ্য নোয়াখালীর পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। সব উপজেলায় কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। উপকূলে ৮ হাজার ৩৮০ জন স্বেচ্ছাসেবককে প্রস্তুত রাখা হয়েছে। উপকূলীয় এলাকার সব সাইক্লোন শেল্টার ও বিদ্যালয়সহ ৪৬৩টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। নগদ ১০ লাখ টাকা, ১৫ হাজার ৫০০ মেট্টিক টন চাল, ২৭০০ মেট্টিক টন গম মজুত রাখা হয়েছে।
দেওয়ান মাহবুবুর রহমান আরও বলেন, সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কর্মস্থলে থাকার নির্দেশ প্রদান করেছি এবং জনপ্রতিনিধিদের নিজ এলাকায় থাকার নির্দেশনা দিয়েছি। ঘূর্ণিঝড় মোখা সম্পর্কে ব্যাপক প্রচারণা, ঘূর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্রগুলো প্রস্তুত রাখা, প্রয়োজনে তাৎক্ষণিকভাবে জনগণকে আশ্রয় কেন্দ্রে নিয়ে আসা ও স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে নিবিড় যোগাযোগ রক্ষা করে ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালনাসহ ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় যথাযথ কার্যক্রম গ্রহণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
সকলকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে জেলা প্রশাসক বলেন, সবাই একে অন্যের পাশে থাকবো। যদি জনপ্রতিনিধি এবং মানুষজন সোচ্চার থাকে তাহলে যেকোনো পরিস্থিতি আমরা মোকাবিলা করতে পারবো। এক কথায় সবাইকে সজাগ থাকতে হবে। আমরা দোয়া করি যেন আল্লাহ আমাদের সহায় হোন। কোনো ধরনের অসুবিধা হওয়া বা হওয়ার আগে থেকেই আমরা প্রস্তুত থাকব।
সভায় জেলা সিভিল সার্জন ডা. মাসুম ইফতেখার বলেন, আমাদের ১০২টি মেডিকেল টিম প্রস্তুত রয়েছে। ইতোমধ্যে তিন লাখ খাবার স্যালাইন ঢাকা থেকে আনা হয়েছে। সুপেয় পানির অভাবে ডায়রিয়া হতে পারে তাই আমরা পানি বিশুদ্ধ করার ট্যাবলেট প্রস্তুত রেখেছি।
জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস্) বিজয়া সেন বলেন, দুর্যোগের আগে ও পরে আমাদের পর্যাপ্ত পুলিশ মোতায়েন থাকবে। আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে যেন নিরাপদ থাকে সেজন্য পুলিশ পাহারায় থাকবে। দুর্যোগ কবলিত ৪ থানায় ছুটি বাতিল ঘোষণা করা হয়েছে।
জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মোহাম্মদ জাহিদ হাসান খানের সঞ্চালনায় সভায় জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. শফিকুল ইসলাম, এলজিইডি নোয়াখালীর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. ইকরামুল হক, পানি উন্নয়ন বোর্ড নোয়াখালীর নির্বাহী প্রকৌশলী মুন্সী আমির ফয়সাল, জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক হুমায়ুন কবির, সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নিজাম উদ্দিন আহমেদ, সোনাইমুড়ী উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. ইসমাইল হোসেনসহ বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তাগণ, গণমাধ্যমকর্মী, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠেনর নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
হাসিব আল আমিন/এমএএস