চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলার ভারত সীমান্তবর্তী গ্রাম হরিহরনগরে মোহাম্মদ আলী পান্না (৩৯) নামে এক মাদক চোরাকারবারিকে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। সোমবার (১৫ মে) বেলা ১২টার দিকে উপজেলার সীমান্ত ইউনিয়নের হরিহরনগর গ্রামের একটি সেগুন বাগান থেকে ক্ষতবিক্ষত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

নিহত মোহাম্মদ আলী পান্না একই গ্রামের আতিয়ার রহমানের ছেলে। 

জীবননগর থানা পুলিশের পরিদর্শক (ওসি) নাসির উদ্দিন মৃধা ঢাকা পোস্টকে বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, নিহতের বাড়ির অদূরের একটি সেগুন বাগানে তার মরদেহ দেখতে পেয়ে স্থানীয়রা পুলিশকে জানান। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে মরদেহ উদ্ধার করে। মরদেহের একটি কান নেই, নাকের সামনের অংশ কাটা রয়েছে। এছাড়া বুকের বাম পাশে ক্ষত আছে। তিনি মাদক চোরাকারবারির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন বলে জানা যাচ্ছে। প্রকৃত ঘটনা উদঘাটনে পুলিশের একাধিক টিম কাজ করছে। মরদেহের ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।

সীমান্ত ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. ইশাবুল ইসলাম মিল্টন বলেন, শুনেছি রাতে ভারত সীমান্তে ফেনসিডিল পাচার করতে যায় পান্না। এসময় ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) তাকে গুলি করে হত্যা করেছে। ভারত সীমান্তের তারকাটা থেকে প্রায় আধা কিলোমিটার দূরে তার ক্ষতবিক্ষত মরদেহ পাওয়া গেছে। এতো দূর থেকে গুলি করে হত্যা করা সম্ভব নয়। পুলিশের তদন্তেই প্রকৃত ঘটনা উম্মোচন হবে।

মরদেহের সুরতহাল প্রতিবেদন প্রস্তুতকারী জীবননগর থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) কিয়ামত আলী ঢাকা পোস্টকে বলেন, পান্নার মরদেহের বাম পাজরে একটি ছিদ্র দেখা গেছে। তাকে যদি গুলি করা হয়ে থাকে তাহলে গুলিটি ভেতরে থাকতে পারে। ময়নাতদন্তের পর বিস্তারিত জানা যাবে। এছাড়া বাম কান নেই, নাকের নরম অংশের সামনের অগ্রভাগে কোনো কিছু কামড় দিয়ে খেয়ে ফেলেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ঠোঁটের কিছু অংশে ক্ষত আছে। সুরতহাল প্রতিবেদন প্রস্তুত করে ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে প্রেরণ করা হবে।

অপরদিকে ঘটনাস্থল সীমান্তের নিকট হওয়ায় ঝিনাইদহের মহেশপুর ব্যাটালিয়নের (৫৮ বিজিবি) একটি দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে মহেশপুর ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মাসুদ পারভেজ রানা ঢাকা পোস্টকে বলেন, ভারত সীমান্ত থেকে প্রায় ৫০০-৬০০ গজ দূরে মরদেহটি পাওয়া গেছে। ক্ষত চিহ্ন দেখে বোঝার উপায় নেই কীভাবে মৃত্যু হয়েছে। তিনি ছোটখাটো চোরাকারবারি ছিলেন বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। আমাদের বিজিবির সঙ্গে তার কোনো সম্পৃক্ততা ছিল না। পুলিশ বিষয়টি তদন্ত করছে।

আফজালুল হক/আরকে