জয়পুরহাট জেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের ছেলে খাজা আল আমিন ওরফে সোহাগকে (৪২) গ্রেপ্তার করতে গিয়ে পুলিশ সদস্যরা হামলার শিকার হয়েছেন। সোমবার (১৫ মে) রাত পৌনে ৯টার দিকে জেলা আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ের সামনে কেন্দ্রীয় ঈদগাহ মাঠের প্রধান ফটকে এ ঘটনা ঘটে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনসহ তিনটি মামলার গ্রেপ্তারি পরোয়ানাভুক্ত আসামি তিনি।

ঘটনাস্থল থেকে বাঁশের লাঠি, লোহার রড ও পাথর জব্দ করেছে পুলিশ। ঘটনার পর মঙ্গলবার (১৬ মে) পাঁচজনকে আসামি করে থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন জয়পুরহাট থানা পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) মো. রুবেল হোসেন।

গ্রেপ্তারকৃত আসামি খাজা আল আমিন ওরফে সোহাগ জয়পুরহাট শহরের জানিয়ার বাগান মহল্লার বাসিন্দা। তার বাবা খাজা শামছুল আলম জয়পুরহাট জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান।

মামলার এজাহার ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, জয়পুরহাট জেলা পরিষদের চেয়াম্যান খাজা শামছুল আলমের ছেলে খাজা আল আমিন সোহাগের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তাসহ তিনটি মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত। পরোয়ানা তিনটি জয়পুরহাট সদর থানায় পৌঁছায়। এরপর থানা পুলিশ খাজা আল আমিন সোহাগকে গ্রেপ্তার করতে তৎপরতা শুরু করে। মামলার বাদী এসআই রুবেল হোসেনসহ পুলিশের একটি দল সোমবার রাত সাড়ে আটটার পর শহরের বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা করছিলেন।

এ সময় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনসহ তিনটি মামলার পরোয়ানাভুক্ত আসামি খাজা আল আমিন সোহাগ জেলার কেন্দ্রীয় ঈদগাহ মাঠের মূল ফটকে অবস্থান করছেন বলে গোপন সংবাদ পান এসআই মো. রুবেল হোসেন। পরে রাত পৌনে নয়টার দিকে পুলিশের একটি দল ঈদগাহ মাঠের মূল ফটকের কাছে যায়। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে আল আমিন সোহাগ দৌড়ে পালানোর চেষ্টার সময় তাকে আটক করা হয়। পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের পর আসামি খাজা আল আমিন সোহাগের পরিচয় নিশ্চিত হয়।

আরও জানা যায়, হাতকড়া লাগানোর সময় আসামি খাজা আল আমিন পুলিশকে ধাক্কা দিয়ে গ্রেপ্তার এড়িয়ে পালানোর চেষ্টা করেন। এ সময় অন্য আসামিরা সেখানে উপস্থিত হয়ে সরকারি কাজে বাঁধা দেন। এ সময় পরির্দশক গোলাম সারওয়ার তাদের গ্রেপ্তারি পরোয়ানা দেখান। এক পর্যায়ে তারা আসামিকে ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন এবং বাঁশের লাঠি দিয়ে পুলিশ সদস্যদের মারধর করে এবং পাথর ছুড়ে মারেন। পরে থানা থেকে অতিরিক্ত পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে সেখান থেকে আসামি আল আমিন সোহাগকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তার সহযোগীরা সেখান থেকে পালিয়ে যায়।

জয়পুরহাট সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সিরাজুল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, তিন মামলার পরোয়াভুক্ত আসামি খাজা আল আমিন সোহাগকে গ্রেপ্তার করতে গেলে পুলিশের ওপর হামরা হয়েছে। এ সময় পুলিশকে লক্ষ্য করে পাথর ছোড়া ও মারধর করা হয়। এতে থানার দুই উপপরির্দশক রেজাউল করিম, আলমগীর হোসেন ও সহকারী উপপরির্দশক আসাদুজ্জামানকে জখম অবস্থায় উদ্ধার করে জয়পুরহাট আধুনিক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। আসামি সোহাগকে গ্রেপ্তারের পর আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

চম্পক কুমার/এবিএস