চাকরি স্থায়ীকরনের এক দফা দাবিতে গভীর রাতেও আন্দোলন চলছে গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি) চুক্তিভিত্তিক নিয়োগপ্রাপ্ত (মাস্টাররোল) কর্মচারীদের।

টানা গত ১৫ ঘন্টারও বেশি সময় ধরে চলছে বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টাররোল কর্মচারীদের এই আন্দোলন। দাবি পূরন না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণার পাশাপাশি ভবিষ্যত কর্মসূচি হিসেবে আমরন অনশন করার পরিকল্পনাও রয়েছে বলে জানিয়েছেন আন্দোলনকারীরা।

আন্দোলনকারী কর্মচারীদের নানা স্লোগানে ক্যাম্পাসপাড়া মুখর। বুধবার ১৭ মে রাত সাড়ে এগারোটার দিকে বশেমুরবিপ্রবির উপাচার্যের দপ্তরের সামনে গিয়ে এ চিত্র দেখা গেছে।

আন্দোলন কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া মাস্টাররোল কর্মচারী মোহম্মদ আলী ঢাকা পোস্টকে বলেন, ‘আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ে  চুক্তিভিত্তিক চাকরি করি । সম্প্রতি আমাদের মধ্যে ১৮ জনের চাকরি স্থায়ী হয়েছে, অবশিষ্ট ১৩৪ জন মানবেতর জীবন যাপন করছি। মাসে ৫ হাজার টাকায় এই বাজারে কিছুই হয় না।  আমাদের দাবি আমাদের চাকরি স্থায়ী করা হোক। চাকরি স্থায়ীকরণ না করলে আমরা আমাদের অবস্থান কর্মসূচি থেকে উঠবো না।’

‘আমরা আপাতত অবস্থান কর্মসূচী পালন করছি। দাবি পূরণ না হলে আমরন অনশন কর্মসূচী শুরু করতে বাধ্য হবো। দাবি পূরন না হওয়া পর্যন্ত উঠবো না।

অবস্থান কর্মসূচি পালন করার সময় দুপুরে  আমাদের মধ্যে  কোহিনুর নামের একজন অসুস্থ হয়ে পড়েছেন বলেও জানিয়েছেন মোহম্মদ আলী।

আন্দোলনে অংশ নেওয়া আরেক কর্মচারী জানান, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে আগে থেকে স্মারকলিপি দিয়েছিলেন তারা। কিন্তু প্রশাসনের পক্ষ থেকে দৃশ্যমান কোনো উদ্যোগ না নেওয়ায় আন্দোলন শুরু করতে বাধ্য হয়েছেন।

‘সব সমস্যা তাদের মধ্যেই। তারা চাইলে যে কোন সময় আমাদের চাকরি স্থায়ীকরন করা সম্ভব; কিন্তু তারা তা করছে না। আমাদের দাবি পূরন না হওয়া পর্যন্ত আমরা আন্দোলন থেকে  উঠবো না,’ বলেন ওই কর্মচারী।

১৭ মে বুধবার সকাল নয়টার দিকে উপাচার্যের দপ্তরের সামনে এক দফা দাবি নিয়ে আন্দোলন শুরু করে চুক্তি ভিত্তিক কর্মচারীরা। এর কিছু সময় পরে উপাচার্যের দপ্তরের প্রধান ফটকে তালা মেরে দেয় আন্দোলনরত কর্মচারীরা। এসময় দপ্তরে অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন বিশ্ববিদ্যালয়ের  উপাচার্য একিউএম মাহবুব,  প্রক্টর মো. কামরুজ্জামানকে, কোষাধ্যক্ষ মোবারক হেসেন  , রেজিস্টার মো. দলিলুর রহমান। পড়ে ড্রিল মেশিন, সাবল, মোটা রশি দিয়ে দপ্তরের প্রধান ফটকের মেইন গেট ভেঙে ফেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী কর্মচারী সমিতির সভাপতি তরিকুল ইসলামসহ সকল সদস্যরা । এসময় আন্দোলনরত বেশ কয়েকজন কর্মচারী আহত হওয়ার অভিযোগ উঠেছে।  পরে উপাচার্য সহ বাকি কর্মকর্তারা অবমুক্ত হন।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার দলিলুর রহমান ও প্রক্টর মো. কামরুজ্জামানের সাথে কথা হলে তারা বলেন,  ‘২০ মে  গুচ্ছে ভর্তি  পরিক্ষা নিয়ে উপাচার্যের দপ্তর সভা চলছিলো।  এসময় চুক্তিভিত্তিক কর্মচারীরা গেট তালা বন্ধ করে দেয়।  প্রক্টোরিয়াল  বডি তাদের সাথে কথা বলেছে, কিন্তু তারা কোন কিছু মানতে নারাজ।’

‘তারা তাদের চাকরি স্থায়ীকরন চায়।  চাকরি স্থায়ি করন আমাদের হাতে নয়। উপাচার্যের দপ্তরের প্রধান ফটকের গেট কারা ভেঙেছে তা আমরা তদন্ত দেখব।’ 

প্রতিনিধি/ এসএমডব্লিউ