রাজশাহীর বাঘায় ইব্রাহিম দেওয়ান (৩০) নামে এক মাছ ব্যবসায়ীকে গুলি করে ও কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। বুধবার (২৪ মার্চ) রাত সাড়ে ১০টার দিকে হাসপাতালে নেওয়ার পথে তিনি মারা যান।

নিহত ইব্রাহিম দেওয়ান উপজেলার চকরাজাপুর ইউনিয়নের চৌমাদিয়া গ্রামের হাবু দেওয়ানের ছেলে। তার তিন সন্তান রয়েছে। তিনি একজন ক্ষুদ্র মাছ ব্যবসায়ী ছিলেন।

এর আগে রাত ৯টার দিকে ভারতীয় সীমান্ত ঘেঁষা পদ্মারচর চৌমাদিয়ায় প্রতিপক্ষের হামলার শিকার হন ইব্রাহিম। ওই সময় সেখান থেকে মোশাররফ হাওলাদার (৪৫) নামে এক ব্যক্তিকে ধরে নিয়ে যায় বিজিবির পোশাক পরিহিত লোকজন। মোশাররফ হাওলাদার একই ইউনিয়নের আতারপাড়া এলাকার বাসিন্দা। ঘটনার সময় তিনি নিহত ইব্রাহিমের সঙ্গেই ছিলেন। 

চকরাজাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আজিজুল আযম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, দীর্ঘদিন ধরেই দুই পক্ষের মধ্যে জমি-জমা নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল। কয়েকদিন আগে এক পক্ষ আরেক পক্ষের কলার বাগানে আগুন দেয়। এ নিয়ে সংঘর্ষ বাধে। গুলাগুলিও হয়। পরে বিষয়টি মিটমাটও হয়ে যায়। কিন্তু হঠাৎ করেই বুধবার রাতে আবারও দুই পক্ষ সংঘর্ষে জড়ায়।

স্থানীয়রা জানান, বুধবার রাতে চৌমাদিয়া বাজারে বসে আড্ডা দিচ্ছিলেন ইব্রাহিম ও মোশাররফ। এ সময় প্রতিপক্ষ রশিদ ও জিয়া গ্রুপের লোকজন তাদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। ইব্রাহিমকে গুলি করার পর কোপানো হয়। ওই সময় বিজিবির পোশাক পড়া কয়েকজনকে দেখা গেছে। তারাই মোশাররফকে তুলে নিয়ে যান। পরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়ার পথে মারা যান ইব্রাহিম।

তারা আরও জানান, রশিদ ও জিয়া এলাকার চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী। তারা চরাঞ্চলে আধিপত্য বিস্তার করার জন্য এলাকায় আতঙ্ক ছড়ায়। যেকোনো কারণেই হোক পূর্ব শত্রুতার জের ধরে ইব্রাহিমকে খুন করা হয়েছে।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন বাঘা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আবদুল বারী। তিনি বলেন, নিহতের পিঠে ও পেটের বাম পাশে গুলির চিহ্ন রয়েছে। তাছাড়া তার পায়ে কোপানোর গভীর ক্ষত রয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, অতিরিক্ত রক্তক্ষরণেই তার মৃত্যু হয়েছে। 

তিনি আরও বলেন, রাতেই মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৫ মার্চ) সকালে মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ নিয়ে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নিচ্ছেন নিহতের স্ত্রী। জড়িতদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার চেষ্টা চালাচ্ছে পুলিশ।

এদিকে, ঘটনাস্থল থেকে মোশাররফ হাওলাদারকে আটকের কথা স্বীকার করেছেন বিজিবির উদয়নগর ক্যাম্পের হাবিলদার আবুল কাশেম। তিনি বলেন, রাত ৯টার দিকে বিজিবির একটি দল সীমান্তে নিয়মিত টহল দিচ্ছিল। এ সময় মাঠের ভেতর থেকে একটি পিস্তলসহ মোশাররফ হাওলাদারকে আটক করা হয়। পরে তাকে ছিনিয়ে নিতে সংঘবদ্ধ গ্রামবাসী বিজিবিরি ওপর হামলা চালিয়েছে। আটক মোশাররফকে নিয়ে তারা নিরাপদে ক্যাম্পে ফিরে আসেন। 

ফেরদৌস সিদ্দিকী/এসপি