নরসিংদীতে সাবেক ছাত্রদল নেতা সাদেকুর রহমান সাদেককে গুলি করে হত্যার ঘটনায় জেলা বিএনপির সদস্য ও হাজীপুর ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক জাহিদুল ইসলামের বাড়িতে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

বৃহস্পতিবার (২৫ মে) রাত পৌনে ১১টার দিকে সদরের হাজিপুর এলাকায় এই ঘটনা ঘটে।

জানা গেছে, জাহিদুল ইসলাম কেন্দ্রীয় বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ও জেলা বিএনপির আহ্বায়ক খায়রুল কবির খোকনের সমর্থক। বৃহস্পতিবার বিকেলে ছাত্রদল নেতা সাদেকের মৃত্যুর পর পদবঞ্চিত ছাত্রদল নেতা মাঈনউদ্দিন ভুঁইয়ার লোকজন জাহিদুলের বাড়িতে হামলা চালায়। নিহত সাদেক পদবঞ্চিত ছাত্রদল নেতা মাঈনউদ্দিন ভুঁইয়ার সমর্থক ছিলেন।

এ ব‍্যাপারে জেলা বিএনপির সদস্য জাহিদুল ইসলাম বলেন, গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার আন্দোলনকে দমন করার জন‍্য ও খায়রুল কবির খোকন ভাইকে দুর্বল করতে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা আলতাফ মেম্বারের নেতৃত্বে সাদেকের প্রায় শতাধিক লোকজন আমার বাড়িতে ককটেল বিস্ফোরণ, গুলিবর্ষণ ও অগ্নিসংযোগসহ ভাঙচুর চালায়। এ ঘটনায় তিনি প্রকৃত দোষীদের বিচার দাবি করেন।

আরও পড়ুন : নরসিংদীতে দুই পক্ষের সংঘর্ষে ছাত্রদলের সাবেক নেতা নিহত

নরসিংদী মডেল থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ আবুল কাশেম বলেন, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগের এমন কোনো ঘটনা আমার জানা নেই। খোঁজ নিয়ে দেখছি।

নরসিংদী জেলা বিএনপির সদস্য ও হাজীপুর ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক জাহিদুল ইসলামের বাড়িতে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ

এর আগে, বৃহস্পতিবার বিকেলে নরসিংদী জেলা ছাত্রদলের দুই পক্ষের সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হন সাদেক ও আশরাফুল নামে দুই ছাত্রদল নেতা। এ সময় আহত হন আরও ৪ কর্মী। পরে গুলিবিদ্ধ সাদেক ও আশরাফুলকে ঢাকা নেওয়ার পথে সাদেকের মৃত্যু হয়। আশরাফুল বর্তমানে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

প্রসঙ্গত, চলতি বছরের ২৬ জানুয়ারি জেলা ছাত্রদলের পাঁচ সদস্যের আংশিক কমিটির অনুমোদন দেন কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সভাপতি কাজী রওনকুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক সাইফ মাহমুদ। দীর্ঘ ১২ বছর পর ঘোষিত ওই কমিটিতে সিদ্দিকুর রহমানকে সভাপতি ও মেহেদী হাসানকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়। ওই কমিটির সাধারণ সম্পাদক পদপ্রত্যাশী ছিলেন মাঈনউদ্দিন ভুঁইয়া। প্রত্যাশিত পদ না পাওয়ায় তার কর্মী-সমর্থকরা ওইদিনই জেলা বিএনপির কার্যালয়ের প্রধান ফটক ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে শতাধিক প্লাস্টিকের চেয়ার, ব্যানার, প্রচারপত্র ও ফেস্টুনে আগুন লাগিয়ে দেন। ইটপাটকেল ছুড়ে কার্যালয়ের জানালা ও সিঁড়ির গ্লাস ভাঙচুর করেন। পরে ৩০ জানুয়ারি বিকেলে ওই স্থানেই খায়রুল কবির খোকনের কুশপুত্তলিকা দাহ করেন তারা। এছাড়া ঘোষিত কমিটি বাতিলের দাবিতে তারা বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করেন। ১১ ফেব্রুয়ারি সকালে শিবপুরের ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের ইটাখোলা মোড়ে খায়রুল কবির খোকনের গাড়িবহরে গুলি ও ককটেল হামলার ঘটনাও ঘটে। এর জেরে গত ১২ ফেব্রুয়ারি মাইনউদ্দিন ভুঁইয়াসহ তিনজনকে বহিষ্কার করে কেন্দ্রীয় ছাত্রদল। পরে ৫ এপ্রিল বিএনপি কার্যালয়ে ফের হামলা চালিয়ে একের পর এক ককটেল বিস্ফোরণ ও ইটপাটকেল ছোড়া হয়। সর্বশেষ ২০ মে আবার ইটপাটকেল ছুড়ে কার্যালয়ের কাচ ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে।

এমজেইউ