মাদারীপুরের বিভিন্ন স্থানে সেতুর অভাবে চলাচলে দুর্ভোগ পোহাতে হয় স্থানীয় বাসিন্দাদের। অথচ প্রয়োজনীয় স্থানে সেতু নির্মাণ না করে ২২ লাখ টাকা ব্যয়ে সেতু নির্মিত হয়েছে এমন এক স্থানে যেখানে নেই কোনো জনবসতি, নেই সংযোগ সড়ক। এমনি এক সেতুর দেখা মিলেছে মাদারীপুর সদর উপজেলার খোয়াজপুর ইউনিয়নের মধ্যরচক গ্রামে। 

সেখানকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, অপ্রয়োজনীয় স্থানে সেতু নির্মাণ করে সরকারি অর্থের অপচয় করা হয়েছে। এতে ক্ষোভ বিরাজ করছে স্থানীয়দের মাঝে। স্থানীয়দের দাবি উপজেলা প্রকৌশলীর স্থান নির্বাচনে ভুলের কারণে সরকারের লাখ লাখ টাকায় নির্মিত সেতুটি জনগণের কাজে আসছে না। 

সংশ্লিষ্ঠ সূত্রে জানা গেছে, মাদারীপুর সদর উপজেলার খোয়াজপুর ইউনিয়নের মধ্যচর গ্রামের খালের উপর ২২ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হয়েছে একটি সেতু। অথচ আশপাশে নেই বাড়িঘর কিংবা রাস্তাঘাট। এ নিয়ে চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন আশপাশের এলাকার বাসিন্দারা।

তারা বলছেন, অযথাই সরকারি অর্থের অপচয় করা হয়েছে। মানুষের যদি কাজেই না লাগে তাহলে এ সেতু নির্মাণ করা হলো কেন। 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক গ্রামবাসী জানান, খালের ওপারে প্রভাবশালী এক ঠিকাদার অনেক জমি কিনেছেন। ওখানে নাকি গরুর ফার্ম করবেন। তাই আগেভাগেই সেতু নির্মাণ করা হয়েছে।
 
সংশ্লিষ্ঠ সূত্রে জানা গেছে, সেতু নির্মাণের আগে উপজেলা প্রকৌশলীর মাধ্যমে স্থান নির্বাচন ও সেতুর প্রয়োনীয়তা সম্পর্কিত তথ্যসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে অনুমোদনের জন্য প্রেরণ করা হয়। এরপর অনুমোদন হলে টেন্ডার আহ্বান করা হয়। এরপর নির্মিত হয় সেতুটি। 
 
মাদারীপুর সদর উপজেলা পরিষদ সূত্রে জানা গেছে, এশিয়া উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) অর্থায়নে এই সেতু নির্মাণ করা হয়েছে। যার ব্যয় ধরা হয়েছে ২২ লাখ টাকা। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান আব্দুল্লাহ ট্রেডার্স কাজ সম্পন্ন করেছেন।

ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী আকতার হোসেন বাবুল বলেন, ‘আমি টেন্ডার পেয়েই কাজ করেছি। স্থান নির্বাচন করে ইঞ্জিনিয়ার আমাকে সাইট বুঝিয়ে দিয়েছে। আমার দায় কাজের গুণগত মান নিয়ে। এই সেতু দিয়ে লোক চলাচল করল কি করল না সেটা দেখার দায়ভার আমার না। 

খোয়াজপুর ইউনিয়ন পরিষদের ৭নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য দবির মালত বলেন, আমাদের এলাকায় অনেক স্থানে সেতু দরকার কিন্তু সেতু নেই। একটি সেতু নির্মাণ করা হয়েছে সেখানে বাড়িঘর নাই রাস্তাঘাটও নাই। সেতু নির্মাণ হবে সেটাও আমরা জানতাম না।

একই রকম বক্তব্য স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জয়নাল মোল্লার। তিনি জানান, আমার ইউনিয়নের অনেক স্থানেই সেতু দরকার অথচ সেতু হচ্ছে না। অথচ যেখানে দরকার নেই সেখানে সেতু নির্মাণ করা হয়েছে। 
 
মাদারীপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মাইনুদ্দিন বলেন, সরকারের অর্থ কাজে আসবে না এমন কোনো স্থানে সেতু নির্মাণ করার কথা নয়। সেতু নির্মানের আগে স্থান নির্বাচন করা হয়। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে।
 
রাকিব হাসান/আরকে