তীব্র তাপপ্রবাহে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে উত্তরের জেলা দিনাজপুরের মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা। বৃহস্পতিবার (১ জুন) বিকেল ৩টায় জেলার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৪১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এটিই চলতি মৌসুমে এ পর্যন্ত সর্বোচ্চ তাপমাত্রা বলে নিশ্চিত করেছেন দিনাজপুর আঞ্চলিক আবহাওয়া দপ্তরের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আসাদুজ্জামান।

এদিকে সূর্যের প্রখর তাপে হাঁসফাঁস করছে মানুষ। প্রচণ্ড রোদে ঘর থেকে বের হতে পারছেন না শ্রমিক, দিনমজুরসহ খেটে খাওয়া মানুষ। রিকশা-ভ্যানচালকরা গরমে অস্থির হয়ে পড়েছেন। একটু প্রশান্তির খোঁজে গাছের ছায়া ও ঠান্ডা পরিবেশে গা এলিয়ে দিচ্ছেন। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে রাস্তা ঘাটে লোকজনের চলাচল সীমিত হয়ে পড়ছে। আবার অনেকে জরুরি প্রয়োজন ও জীবন-জীবিকার তাগিদে প্রচণ্ড তাপদাহ উপেক্ষা করে কাজে বের হচ্ছেন। প্রখর রোদে মাঠে দীর্ঘক্ষণ কাজ করতে গিয়ে অনেকে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন।

অটোরিকশাচালক মজিবর রহমান বলেন, সকাল থেকেই তাপমাত্রা অনেক বেশি। দুপুরের পর থেকে আরেকটু বেশি মনে হচ্ছে। কিছুক্ষণ আগেই একজনের কাছে জানতে পারলাম যে দিনাজপুরে আজকে ৪১ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা বিরাজ করছে। এই অবস্থায় বাইরে কেউ চলাচল করছে না। ভাড়াও তেমন নেই, কষ্টে আছি।

ভ্যানচালক আমিনুল ইসলাম বলেন, গত কয়েক বছরে এরকম তাপমাত্রা দিনাজপুরে হয়নি। রোদ আর গরমের কারণে যাত্রীরা ভ্যানে উঠছে না। প্রয়োজন ছাড়া মানুষ ঘরের বাইরে আসছে না। আগে সারাদিন চার থেকে পাঁচশ টাকা ইনকাম হলেও এখন দুই থেকে তিনশ টাকা আয় হচ্ছে।

পথচারী জুলফিকার আলী বলেন, আজকের যে তাপমাত্রা মনে হচ্ছে গা পুড়ে যাচ্ছে। পাঁচ মিনিট রাস্তায় হাঁটলে গোটা শরীর ঘেমে অস্থির হয়ে যায়। মাঝে মধ্যে মনে হয় গায়ে আগুন ধরেছে। তাই একটু পরপরই হাতে মুখে পানি দিয়ে কোনোরকম বেঁচে আছি।

পথচারী মোবারক হোসেন বলেন, আমি বীরগঞ্জ থেকে দিনাজপুরে মোটরসাইকেলযোগে এসেছি। মনে হচ্ছে যে রাস্তা থেকে আগুন বের হচ্ছে। একদিকে সূর্যের  তাপ, অপরদিকে নিচ থেকেই পিচ ঢালা রাস্তা থেকেও গরম বের হচ্ছে। ফলে মনে হচ্ছে শরীর পুড়ে যাচ্ছে।

দিনাজপুর আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আসাদুজ্জামান ঢাকা পোস্টকে বলেন, দিনাজপুরে আজ বৃহস্পতিবার বিকেল তিনটায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৪১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এটি চলতি মৌসুমে জেলায় এ পর্যন্ত সর্বোচ্চ তাপমাত্রা।

ইমরান আলী সোহাগ/এবিএস