টানা তিন বছর ধরে চলমান পায়রা তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রে কয়লা সংকটের কারণে প্রথমবারের মতো সম্পূর্ণরূপে বিদ্যুৎ উৎপাদন বন্ধ হচ্ছে। আগামী সোমবার (৫ জুন) থেকে পুরোপুরি বিদ্যুৎ উৎপাদন বন্ধ হচ্ছে এই কেন্দ্রে। প্রথম ইউনিটের বিদ্যুৎ উৎপাদন আগেই বন্ধ হয়ে গেছে। এবার দ্বিতীয় ইউনিটের বিদ্যুৎ উৎপাদন বন্ধ হয়ে যাবে। এতে পায়রা তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রের উৎপাদন পুরোপুরি বন্ধ থাকবে। ‌

তবে পায়রা তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র কর্তৃপক্ষ জানায়, নতুন করে কয়লা আমদানির জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক এবং সরকার যৌথভাবে ১০০ মিলিয়ন ডলার ব্যবস্থা করে দিয়েছে। জুনের শেষে কয়লা আসলে আবার পুরোপুরিভাবে বিদ্যুৎকেন্দ্রটি চালু করা হবে।

এদিকে পায়রা তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রের বিদ্যুৎ উৎপাদন বন্ধ হওয়ার পর থেকে লোডশেডিং বেড়ে গেছে। বিদ্যুৎ সংকট নিয়ে জনমনে আতঙ্ক বিরাজ করছে।

পায়রা ১৩২০ মেগাওয়াট তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী শাহ আব্দুল হাসিব বলেন, কয়লা সংকটের কারণে বন্ধ হচ্ছে দেশের সবচেয়ে বৃহত্তর কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র পায়রা। চালুর তিন বছরের মধ্যে এই প্রথম বিদ্যুৎ উৎপাদন বন্ধ থাকবে। তবে ইতোমধ্যে এলসি খোলা হয়েছে। আগামী ২৫ জুন প্রথম কয়লাবাহী জাহাজ পায়রা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে আসবে। এতে ২১ দিনের আগে বিদ্যুৎ চালু হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম বলেও জানান এই কর্মকর্তা। 

চীন ও বাংলাদেশের যৌথ বিনিয়োগে ২০২০ সালে পায়রা তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রে বাণিজ্যিকভাবে কার্যক্রম শুরু হয়। কেন্দ্রটি চালানোর জন্য প্রয়োজনীয় কয়লা কিনতে ঋণ দেয় চীনা অংশীদার চায়না ন্যাশনাল মেশিনারি ইমপোর্ট অ্যান্ড এক্সপোর্ট কোম্পানি (সিএমসি)। এপ্রিল মাস পর্যন্ত বকেয়া বিল দাঁড়ায় প্রায় ৩৯০ মিলিয়ন ডলার। এ বকেয়া বিল পরিশোধ না করায় সিএমসি কয়লা সরবরাহ বন্ধ করে দেয়। 

তিন বছর আগে উৎপাদনে আসার পর এই প্রথম পুরোপুরি বিদ্যুৎ উৎপাদন বন্ধ হচ্ছে পায়রা তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রে । তবে এর আগে ডলার সংকটে কয়লা না কিনতে পারায় রামপাল তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রও দুই দফা বন্ধ হয়েছিল।

মাহমুদ হাসান রায়হান/আরএআর