গত ৪ দিন ধরে নিখোঁজ ফল ব্যবসায়ী মো. ছিদ্দিক মিজি ওরফে সোহেলকে (৪৮) উদ্ধার করেছে পুলিশ। ডিবি পুলিশ কর্তৃক তুলে নেওয়ার নাটক এতদিন ধরে আত্মগোপনে ছিলেন তিনি। গতকাল শুক্রবার (৯ জুন) সকালে চট্টগ্রামের বহাদ্দারহাট এলাকা থেকে রাজবাড়ী থানা পুলিশের একটি বিশেষ দল তাকে উদ্ধার করে।

ব্যবসায়ী ছিদ্দিক মিজি ওরফে সোহেল রাজবাড়ী সদর উপজেলার মিজানপুর ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের নয়নদিয়া গ্রামের মো. হাশেম মিজির ছেলে। 

এর আগে, গত মঙ্গলবার (৬ জুন) রাত সাড়ে ১১টায় ডিবি পুলিশ পরিচয় দিয়ে ব্যবসায়ী ছিদ্দিক মিজি ওরফে সোহেলকে রাজবাড়ী-কুষ্টিয়া আঞ্চলিক মহাসড়কের বাগমারা কালার দোয়ালের ব্রিজ এলাকা থেকে তুলে নেওয়ার অভিযোগে তার বাবা বৃদ্ধ মো. হাশেম মিজি গত বুধবার (৭ জুন) রাজবাড়ী থানায় জিডি করেন। 

ডিবি পুলিশ পরিচয়ে তাকে তুলে নেওয়ার ঘটনায় প্রিন্ট-ইলেক্টনিক ও অনলাইন মিডিয়াসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক প্রচার পায়। তাকে উদ্ধারের জন্য মাঠে নামে রাজবাড়ী থানা পুলিশসহ জেলা পুলিশের তথ্য প্রযুক্তিতে পারদর্শী একটি টিম।

আরও পড়ুন: ব্যবসায়ী সিদ্দিককে তাহলে কারা তুলে নিয়ে গেল!

এ বিষয়ে রাজবাড়ীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো.ইফতেখারুজ্জামান জানান, মূলত ঘটনাটি ছিল ছিদ্দিক মিজির সাজানো নাটক। ব্যবসায়ী ছিদ্দিক মিজি ঋণগ্রস্ত ছিলেন। অনেকেই তার কাছে মোটা অংকের টাকা পায়। ঋণের টাকা ফেরত না দিতে পেরে সে হতাশায় ভুগছিল। তাই সে নিজে আত্মগোপন করার জন্য এই নাটক সাজায় এবং সে তার বন্ধুর সঙ্গে পরিকল্পনা করে কাজটি করে। সে তার বন্ধু সাঈদকে ফোন দিয়ে বলে যে তাকে ডিবি পুলিশ ধরছে। পরবর্তীতে বন্ধু সাঈদ পরিবারকে জানালে ছিদ্দিকের বাবা থানায় নিখোঁজ জিডি করে। জিডির সূত্র ধরে তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে গতকাল শুক্রবার সকালে তাকে চট্টগ্রামের বহাদ্দারহাট থেকে তাকে উদ্ধার করে রাতে রাজবাড়ী সদর থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। সে এখন রাজবাড়ী থানায় হেফাজতে আছেন। 

রাজবাড়ী থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ শাহাদাত হোসেন বলেন, ব্যবসায়ী ছিদ্দিক মিজি নিখোঁজের ব্যাপারে থানায় জিডি এন্ট্রির পর দেশের প্রত্যেকটি থানায় ম্যাসেজ দেওয়া হয়। এছাড়াও জিডির সূত্র ধরে থানা পুলিশ তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে গতকাল শুক্রবার সকাল ১০টায় তাকে চট্টগ্রামের বহাদ্দারহাট থেকে তাকে উদ্ধার করে রাত ৯টার দিকে থানায় নিয়ে আসে। পরবর্তীতে মুচলেকা নিয়ে রাতেই তাকে তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

উদ্ধার হওয়া ছিদ্দিক মিজি রাজবাড়ী থানায় উপস্থিত সাংবাদিকদের জানান, সে এনজিও আশা, ব্র্যাক ও শক্তি ফাউন্ডেশন থেকে বিপুল পরিমাণ টাকা ব্যবসার জন্য ঋণ নেয়। কিন্তু ঋণের কিস্তির টাকা সময়মত দিতে না পারায় এনজিওদের চাপে সে আত্মগোপন করে এ নাটক সাজিয়ে ছিল। এজন্য তিনি অনুতপ্ত।

মীর সামসুজ্জামান/আরকে