মামলা তুলে নিতে ছাত্রলীগ নেতাকে হত্যার হুমকি
ইউপি সদস্য আব্দুর রহিম
লক্ষ্মীপুরের রামগতিতে মো. সুমন (৩৫) নামের এক গাছ ব্যবসায়ীকে শারীরিক নির্যাতনের ঘটনায় করা মামলা তুলে নিতে বাদী আব্দুল মাজেদ রাজীবকে হত্যার হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
উপজেলার চরবাদাম ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য ও মামলার প্রধান আসামি আব্দুর রহিমের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ করা হয়।
বিজ্ঞাপন
বুধবার (১৪ জুন) বিকেলে ছাত্রলীগ নেতা রাজীব এ অভিযোগ করেন। ইউপি সদস্যের হুমকিতে তিনি আতঙ্কে রয়েছেন বলে জানিয়েছেন। ঘটনাটি তিনি মুঠোফোনে রামগতি থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলমগীর হোসেনকেও জানিয়েছেন।
রাজীব চরবাদাম ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ও ইউনিয়নের পূর্ব চরসীতা গ্রামের আবুল বাশারের ছেলে।
বিজ্ঞাপন
ছাত্রলীগ নেতা আব্দুল মাজেদ রাজীব বলেন, ইউপি সদস্য আব্দুর রহিম আমার বড় ভাই সুমনকে অপহরণ করে অমানবিক নির্যাতন করেন। এ ঘটনায় আমি মামলা করেছি। ওই মামলায় উচ্চ আদালত থেকে তারা জামিনে এসে আমাকে বিভিন্ন মাধ্যমে হুমকি দিচ্ছে। মামলা তুলে না নিলে আমাকে হত্যা করা হবে বলে জানিয়েছে।
এ ব্যাপারে ইউপি সদস্য আব্দুর রহিম বলেন, রাজীবদের সঙ্গে আমাদের জমি নিয়ে বিরোধ রয়েছে। এজন্য সাজানো ঘটনায় মামলা দিয়ে আমাকে হয়রানি করা হচ্ছে। রাজীবকে হুমকি দেওয়ার ঘটনা সত্য নয়। আজ সকালে ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে মামলার প্রতিবাদে মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়।
রামগতি থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলমগীর হোসেন বলেন, মামলার বাদী আমাকে মুঠোফোনে হুমকি দেওয়ার বিষয়টি জানিয়েছেন। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে। এছাড়া আসামিরা উচ্চ আদালত থেকে ৬ সপ্তাহের জামিন নিয়েছেন। অন্তর্বর্তীকালীন জামিন শেষে তাদেরকে নিম্ন আদালতে উপস্থিত হওয়ার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
ভুক্তভোগী মো. সুমন জানান, গত বুধবার (৭ জুন) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে পঞ্চায়েত বাড়ির জামে মসজিদের সামনের রাস্তায় দুটি সিএনজিচালিত অটোরিকশাযোগে কয়েকজন লোক আসেন। একপর্যায়ে মামলা আছে বলে তারা পুলিশ পরিচয়ে সুমনকে মসজিদ থেকে প্রায় দেড় কিলোমিটার দূরে ভুলুয়া নদীর পাশে ফিরোজ মিয়ার প্রকল্প এলাকার নির্জন স্থানে তুলে নিয়ে যায়। এ সময় গাছের সঙ্গে দুই হাত বেঁধে তার (সুমন) মোবাইল ফোন থেকেই ইউপি সদস্য আব্দুর রহিমকে কল দেওয়া হয়। ফোন পেয়ে আব্দুর রহিম ঘটনাস্থলে যান। এরপর সুমনকে বিবস্ত্র করার নির্দেশ দেন তিনি ( আব্দুর রহিম)। একপর্যায়ে তার শরীরে পিঁপড়া ছেড়ে এলোপাতাড়ি মারধর করেন। পরে মুখে কাঁদা ঢুকিয়ে দিলে বমি করেন সুমন। এ সময় ফের মুখে লতাপাতা ঢুকিয়ে দেওয়া হয়। পরে কালো কাপড়ে মুখ বেঁধে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যান তারা। রাত ১টার দিকে পুলিশ তাকে ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে।
এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার (৮ জুন) রাতে সুমনের ভাই রাজীব বাদী হয়ে থানায় অপহরণ মামলা করেন। মামলায় ইউপি সদস্য আব্দুর রহিমসহ সাতজনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাতপরিচয় আরও ৪-৫ জনকে আসামি করা হয়।
হাসান মাহমুদ শাকিল/এমজেইউ