যশোর সদর উপজেলার রাজারহাট সীতারামপুর গ্রামের কাজল হোসেন। পেশায় তিনি একজন সরকারি চাকরীজবী। শখের বসে ২০১৭ সালে তার বসতবাড়িতে তৈরি করেন একটি গরুর খামার। এরপর ২০১৯ সালের মে মাসে অভয়নগর উপজেলার নওয়াপাড়া হাট থেকে ৭০ হাজার টাকা দিয়ে হলস্টেইন ফ্রিজিয়ান জাতের একটি এঁড়ে বাছুর ক্রয় করেন।

বাছুরটির নাম দেন ‘ভাইজান’। চার বছরের মাথায় কাজল হোসেনের খামারের ৩৭টি গরুর মধ্যে  সব থেকে বড় গরু ভাইজান। আসন্ন কোরবানির ঈদে বিক্রি করা হবে ভাইজানকে।

ভাইজানের বর্তমান ওজন ১৪০০ কেজিরও বেশি। কাজল হোসেনের খামারের এই বিশাল দেহী গরুটিকে এক নজর দেখতে সকাল-বিকেল ভিড় করছে দূর- দূরান্তের মানুষেরা। 

কাজল হোসেন জানান, বিশাল দেহী গরুটিকে প্রাকৃতিক খাবার কাঁচা ঘাস, মোটা গমের ভুসি, আটা সোয়াবিনের খৈল, রাইস পালিশ, ভুট্টার গুড়ো ইত্যাদি খাইয়ে লালন-পালন করা হয়েছে। বর্তমানে ভাইজানের উচ্চতা পেছনের অংশে ৬৫-৬৭ ইঞ্চি, সামনের অংশে ৭১-৭২ ইঞ্চি এবং লম্বায় ১০ ফুটেরও বেশি। আসন্ন কেরবানির ঈদে ভাইজানকে বিক্রি করা হবে। 

তবে এখনো দাম হাঁকাননি খামারি কাজল হোসেন। ক্রেতারা বাড়ি থেকে সরাসরি দেখে দাম করবেন বলে এই মুহূর্তে দাম হাঁকাতে ইচ্ছুক নন কাজল হোসেন।

তিনি বলেন, বিশাল দেহী ভাইজানকে আসন্ন কোরবানির ঈদের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে। রোগ বালাইয়ের হাত থেকে রক্ষা করতে চিকিৎসকের পরামর্শে ওষুধপত্র ব্যবহার করা হয়েছে। তাছাড়া সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক খাবার খাইয়ে গরুটিকে প্রস্তুত করা হয়েছে। বর্তমানে গরুটির পেছনে দৈনিক খরচ ৮০০ থেকে ১ হাজার টাকা।

কাজল হোসেন আরও বলেন, দেশের যেকোনো প্রান্ত থেকে যে কেউ গরুটি ক্রয় করতে পারবেন। তবে কোনো ক্রেতা খামারে এসে সরাসরি গরুটি না দেখা পর্যন্ত দাম হাঁকাচ্ছি না। ক্রয় করার পর দেশের যেকোনো প্রান্তে গরুটি পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা আমার তরফ থেকে করা হবে।

খামারের কর্মচারী সাকিব হোসেন বলেন, তিন বেলা রুটিন করে ভাইজানকে খাবার দেওয়া হয়। এখন যেহেতু গরমের সময় এজন্য প্রতিদিনই গোসল করানো হয়। তার স্বাস্থ্যের দিকে সব সময় খেয়াল রাখা হয়। 

যশোর জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা রাশেদুল হক জানান, বিশাল দেহী যশোরের ভাইজান নামের গরুটিকে কাজল হোসেন প্রাকৃতিক খাবার খাইয়ে প্রস্তুত করেছেন। প্রাণিসম্পদ অফিস থেকে সব সময় তার খামারের দিকে লক্ষ্য রাখা হয়, তাকে পরামর্শ দেওয়া হয়। আমাদের চোখে এটি যশোরের সবচেয়ে বড় দুটি গরুর মধ্যে একটি।

এ্যান্টনি দাস অপু/আরএআর