ব্রাহ্মণবাড়িয়ার খাঁটিহাতা হাইওয়ে থানা ভবনে আগুন দিয়েছে হরতাল সমর্থনকারীরা। রোববার (২৮ মার্চ) দুপুরে এ ঘটনা ঘটে। এতে থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গাজী মো. শাখাওয়াত হোসেনসহ অন্তত ৫ পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। তাদেরকে স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।

ওসি শাখাওয়াত হোসেন জানান, দুপুরে হরতালকারীরা অতর্কিতভাবে থানা ভবনে হামলা করে। এরপর তারা ভাঙচুর চালিয়ে অগ্নিসংযোগ করে। এ ঘটনায় আমিসহ ৫ জন আহত হয়েছি। হামলাকারীরা সবাই পাঞ্জাবি-পায়জামা পরা ছিল।

রোববার সকাল থেকে হরতাল শুরু হলে বেলা ১১টার পর থেকে হরতালকারীরা ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা পরিষদ কার্যালয়, ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভা কার্যালয়, পৌর মিলনায়তন, শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত ভাষা চত্বর, সুর সম্রাট আলাউদ্দিন সঙ্গীতাঙ্গন, সদর উপজেলা সহকারী কমিশনারের (ভূমি) কার্যালয়, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আল মামুন সরকারের কার্যালয় ও বাড়ি এবং জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রবিউল হোসেন রুবেল ও সাধারণ সম্পাদক শাহাদাৎ হোসেনের বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। 

এ ছাড়া হরতালকারীর ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিরাসারস্থ বাংলাদেশ গ্যাস ফিল্ডস কোম্পানি লিমিটেডের কার্যালয় এবং জেলা পুলিশ লাইনে হামলার চেষ্টা চালায়। দুপুর ১২টার দিকে হেফাজত কর্মীরা ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাব ভবনে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করে। 

এ সময় প্রেসক্লাব ভবনের সামনে ক্লাবের সভাপতি রিয়াজ উদ্দিন জামির ওপর হামলা চালায় হেফাজত কর্মীরা।  তার মাথায় ছয়টি সেলাই দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক জাবেদ রহিম বিজন।

এ ছাড়া সকালে শহরের পৈরতলা এলাকায় হরতালের ছবি তুলতে গেলে আমাদের নতুন সময় পত্রিকার প্রতিনিধি আবুল হাসনাত রাফিকেও মারধর করে হরতলকারীরা।

এ ব্যাপারে বক্তব্য জানতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পুলিশ সুপার মো. আনিসুর রহমানের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করলেও তিনি রিসিভ করেননি।

হরতালের সমর্থনে সকাল ৮টার দিকে হেফাজতে ইসলামের নেতাকর্মীরা শহরে মিছিল বের করেন। মিছিলটি শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেস ক্লাব চত্বরে গিয়ে শেষ হয়। এরপর সেখানে অনুষ্ঠিত সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির মাওলানা সাজিদুর রহমান, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জামিয়া ইসলামিয়া ইউনুছিয়া মাদরাসার প্রিন্সিপাল মুফতি মুবারকউল্লাহ ও শিক্ষা সচিব শামছুল হক।

সকাল থেকেই হেফাজতকর্মীরা শহরের প্রধান সড়কে (টিএ রোড) বৈদ্যুতিক খুঁটি ফেলে এবং আগুন জ্বালিয়ে যান চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেন। এ ছাড়া হরতালের কারণে শহরের সকল দোকানপাট বন্ধ রয়েছে। জেলা সদর থেকে দূরপাল্লার কোনো বাসও ছেড়ে যায়নি।


আজিজুল সঞ্চয়/এমএএস