রৌমারী-চিলমারী নৌঘাট পারাপারে গুণতে হচ্ছে বাড়তি ভাড়া
কুড়িগ্রামের চিলমারী নৌঘাটে প্রতি বছর ঈদ এলেই যাত্রীদের দ্বিগুণ ভাড়া গুণতে হয়। যার ফলে ভোগান্তিতে পড়েন চিলমারী, রৌমারী ও রাজিবপুর উপজেলাসহ আশপাশের হাজারো নৌযাত্রী। নৌঘাটের এই বাড়তি ভাড়ার ভোগান্তি থেকে রক্ষায় অভিযোগ করেও সুফল পাচ্ছেন না বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগী যাত্রীরসহ স্থানীয়রা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, কুড়িগ্রাম জেলা রৌমারী, রাজিবপুর, চিলমারীসহ আশপাশের লক্ষাধিক মানুষের একমাত্র যাতায়াত ব্যবস্থা হলো নৌপথ। এ ঘাটে ফেরি, লঞ্চ, প্লাটুন না থাকায় নৌকাই একমাত্র ভরসা। ঢাকা থেকে সড়ক পথে যানজটের ভোগান্তি এড়াতে কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট, গাইবান্ধা জেলার অনেক মানুষকে রৌমারী, রাজীবপুর হয়ে নৌকা দিয়ে পারাপার হতে হয়। কিন্তু প্রতি বছরই ঈদে পড়তে হয়ে বাড়তি ভাড়ার ভোগান্তিতে। অন্যান্য সময়ে জনপ্রতি একশ টাকা দিয়ে পার হলেও ঈদে গুণতে হয় বাড়তি টাকা। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। জনপ্রতি একশ টাকার বিপরীতে দিতে হচ্ছে দুইশ টাকা। নৌ টিকিটে ঈদ শুভেচ্ছার নামে দ্বিগুণ ভাড়া নেওয়ার কারণে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন যাত্রীরা।
বিজ্ঞাপন
ঈদে বাড়ি ফিরছেন আলীম নামের এক বেসরকারি ব্যাংক কর্মকর্তা। তিনি অতিরিক্ত ভাড়া দিয়ে রাগে ক্ষোভে নিজের ফেসবুক আইডি থেকে নৌঘাটের টিকিট সম্বলিত একটি পোস্ট করেছেন। তার পোস্টে অনেকেই প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি তুলেছেন।
পোস্টে তিনি লিখেছেন 'রৌমারি নৌঘাটে ব্যাপক দুর্নীতি, এখানে নেই কোনো আইন, নেই কোনো প্রশাসন। ১০০ টাকার নৌকা ভাড়া নিচ্ছে ২০০ টাকা। প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।'
বিজ্ঞাপন
নৌঘাটের মাঝি জলিল বলেন, এখন তেলের দাম বেশি। রৌমারী যেতে আসতে খরচ পড়ে বেশি। যাওয়ার সময় বলা চলে খালি নৌকা নিয়ে যেতে হয়। সে হিসেবে দুশত টাকা খুব একটা বেশি না। এছাড়া বর্তমানে সব কিছুর দাম বেশি। ঈদে বাস ভাড়াও তো দ্বিগুণ গুণতে হচ্ছে।
এ ব্যাপারে নৌঘাট ইজারাদার প্রতিনিধি মান্নান জানান, এই ঘাটটি জেলা পরিষদের আওতায় চলে।কয়েকদিন আগেও জনপ্রতি একশ টাকা নেওয়া হয়েছিল। গত পরশু থেকে দুইশ টাকা নিচ্ছে। তবে এগুলো সিরিয়ালের নৌকা না। নির্দিষ্ট ট্রিপের নৌকাতে এ ভাড়া নেওয়া হয় না। সিরিয়ালের বাইরে যেসব নৌকা চলে তারা দুশত টাকা কিংবা তারও বেশি টাকা নিচ্ছে বলে জানান তিনি।
চিলমারীর বাসিন্দা এবং রেল-নৌ যোগাযোগ ও পরিবেশ উন্নয়ন গণ-কমিটির কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সাবেক সভাপতি নাহিদ হাসান বলেন, ঈদ এলেই ঘাটে নৌকা ভাড়া বেড়ে যায়। ভাড়া নিয়ে যাত্রী ও মাঝিদের মধ্যে প্রায়ই দ্বন্দ্ব লাগে। উপায় না পেয়ে দ্বিগুণ ভাড়া দিয়ে পার হতে হয়। এটি বন্ধ করা উচিত।
জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) ফরিদুল ইসলাম বলেন, নির্ধারিত ভাড়ার বেশি আদায়ের কোনো সুযোগ নেই। আমি খোঁজ নিয়ে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে ব্যবস্থা নেব। মানুষের যাতে কষ্ট না হয়, সে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জুয়েল রানা/আরকে