‘ঈদে বাড়ি যাবো, নাকি বেতন তুলবো’
শিল্প অধ্যুষিত গাজীপুরের অধিকাংশ কারখানার বেতন-ভাতা পরিশোধ করা হয় ব্যাংক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে। চাহিদার তুলনায় এটিএম বুথের সংখ্যা কম থাকায় ওই সব কারখানার শ্রমিকদের বেতন-ভাতা তুলতে বেশ সময় পার করতে হচ্ছে। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন কারখানার শ্রমিকসহ স্থানীয়রা।
মঙ্গলবার (২৭ জুন) বিকেলে গাজীপুরের বিভিন্ন এটিএম বুথের সামনে বেতন-ভাতা তুলতে আসা গার্মেন্টস শ্রমিকরা তাদের ভোগান্তির কথা তুলে ধরেন।
বিজ্ঞাপন
মাওনা চৌরাস্তার ডাচ বাংলা ব্যাংকের ফাস্ট ট্র্যাকে ঘণ্টাখানেক লাইনে দাঁড়িয়ে আছেন ইমরান হোসেন।
তিনি বলেন, কারখানা থেকে মাসিক বেতন গতকাল অ্যাকাউন্টে পরিশোধ করেছে। মাস শেষ, হাতে কোনো টাকা-পয়সা নেই। দুপুরে বাসা থেকে বের হয়েছি এটিএম বুথ থেকে টাকা তুলে স্ত্রী-সন্তান ও স্বজনদের জন্য ঈদের কেনাকাটা করে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হবো। এটিএম বুথে এসে দেখি দীর্ঘ সারি, এখানেই এক ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকতে হয়েছে। আর কতক্ষণ লাগবে তা জানা নেই।
ইমরান হোসেন নামে আরেকজন বলেন, আগে আমরা চাকরি করতাম তখন হ্যান্ড ক্যাশে বেতন পরিশোধ করতো। এটিএম বুথে বেতন দেওয়ার পর প্রতি মাসেই টাকা তুলতে দীর্ঘ লাইনে দাঁড়াতে হয়। এ ভোগান্তি লাখ লাখ কারখানা শ্রমিকদের, ভোগান্তি কমানোর জন্য এটিএম বুথের সংখ্যা বাড়ানোর দাবি জানান তিনি।
বিজ্ঞাপন
আনসার রোড এলাকার প্রবৃদ্ধি নামে একটি কারখানার তিন-চার হাজার শ্রমিকের বেতন পরিশোধ করা হয় ব্যাংক অ্যাকাউন্টে। ওই কারখানার শ্রমিক রাতুল মিয়া আধা ঘণ্টার ওপর লাইনে দাঁড়িয়ে আছেন। তিনি বলেন, আমার সামনে এখনো ৩০-৪০ জন দাঁড়িয়ে আছেন, তারা সবাই টাকা তুলবেন। কোম্পানি তো এসি রুমে বসে বেতন অ্যাকাউন্টে দিয়ে দেয়, আর আমাদের রোদ বৃষ্টি মাথায় নিয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে টাকা তুলতে হয়। এটা আমাদের জন্য পেরেশানি। ঈদে বাড়ি যাবো, নাকি বেতন তুলবো।
লাইনে দাঁড়ানো সবাই এটিএম বুথের সংখ্যা বাড়ানোসহ ভোগান্তি কমিয়ে আনতে ব্যাংক কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি জানান।
এ সময় এটিএম বুথগুলোতে নিরাপত্তা প্রহরী ছাড়া কোনো কর্মকর্তা উপস্থিত না থাকায় তাদের বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। নিরাপত্তা প্রহরীরা এ বিষয়ে কোনো কথা বলতে রাজি হননি।
শিহাব খান/আরএআর