ফাইল ছবি

গত ২৪ ঘণ্টায় দেশের সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে গোপালগঞ্জ জেলায়। গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে আজ বুধবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত আবহাওয়া অধিদপ্তরের দেওয়া তথ্য মতে জেলায় ৯৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। যা গত ২৪ ঘণ্টায় দেশের সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত। এছাড়াও বাতাসের আদ্রতা ছিল ৯৭ শতাংশ। 

এমন আবহাওয়া আগামীকাল ঈদুল আজহার দিনসহ আরও কয়েকদিন থাকবে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন গোপালগঞ্জ কৃষি  আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবু সুফিয়ান। 

তিনি জানান , মৌসুমী বায়ুর প্রভাবে দেশের প্রতিটি জেলায় বৃষ্টিপাত হচ্ছে। ঈদের দিন বৃষ্টি বাড়ার সম্ভাবনাও রয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় জেলায় বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে ৯৭ মিলিমিটার। যা দেশের মধ্যে সর্বোচ্চ রেকর্ড। এছাড়াও জেলায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ২৭ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস ও সর্বনিম্ন ২৩ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এছাড়াও বাতাসের আদ্রতা ছিল ৯৭ শতাংশ। 

আবু সুফিয়ান জানান, আগামীকাল ঈদের দিন জেলার বিভিন্ন স্থানে অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সেই সঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও  মাঝারি ধরনের ভারী থেকে অতিভারী বর্ষণ হতে পারে। এমন আবহাওয়া বিরাজ করবে আরও কয়েকদিন। 

এদিকে জেলায় গতকাল মধ্যরাত থেকে থেমে থেমে মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টিপাত হচ্ছে। বয়ে যাচ্ছে হিমেল বাতাসও। এতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন। সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়েছে দিনমজুর ও খেটে খাওয়া মানুষ। ভোগান্তিতে পিছিয়ে নেই কোরবানির পশুর হাটে আসা ক্রেতা-বিক্রেতারাও। বৃষ্টি উপেক্ষা করে গোবর, কাঁদা পানি মাড়িয়ে চলেছে গরু বেচাকেনা। সকলে বৃষ্টিতে ভিজেই পশু কিনে ফিরছেন বাড়ি। ভোগান্তি থেমে নেই ঈদ মার্কেটেও। বৃষ্টি উপেক্ষা করেই চলছে সাধারণ মানুষের পোশাক কেনাকাটা। 

জেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, বৃষ্টিতে খেটে খাওয়া মানুষগুলো চায়ের দোকান ও রাস্তার মোড়ে মোড়ে অলস সময় পার করছেন। অনেকে বাড়ি থেকেও বের হতে পারেননি। কর্মজীবী মানুষের মধ্যে নেমে এসেছে স্থবিরতা। পোশাকের মার্কেটগুলোতে ক্রেতা কম। থেমে থেমে চলছে কেনাবেচা। 

রিকশাচালক আলিম শেখ (৩৫) বলেন,  সকাল থেকে সন্ধ্যা  পর্যন্ত  মাত্র ৩০০ টাকা কামাই করেছি। বৃষ্টির কারণে শহরে লোকজন নেই। আগামীকাল ঈদ। বাসার জন্য আবার বাজার করতে হবে। সব বাজারের টাকা এখনো কামাই করতে পারিনি। যত রাতই হোক বাজারের টাকা নিয়ে বাসায় যাবো। 

শহরের চায়ের দোকানদার রমজেদ বলেন, সারাদিন একটানা বৃষ্টি হচ্ছে। এতে মানুষ ঘর থেকে প্রয়োজন ছাড়া বের হচ্ছে না। এ কারণে বেচাকেনা তেমন হয়নি। 

শহরের মা কালী গার্মেন্টসের কর্মচারী গফফার বলেন, বৃষ্টির কারণে কেনাবেচা তেমন নেই। মাঝে মধ্যে ক্রেতার চাপ বাড়ছে আবার মাঝে মাঝে ক্রেতা থাকছে না। আগের ঈদে যেমন বেচাকেনা হয়েছে, বৃষ্টির কারণে আজ তার অর্ধেকও নেই। 

আশিক জামান/আরএআর