বিএনপি-জামায়াতের নৈরাজ্যের প্রতিবাদে কিশোরগঞ্জের হাওর উপজেলা অষ্টগ্রামে সংবাদ সম্মেলন করেছে উপজেলা আওয়ামী লীগ। সোমবার (৩ জুলাই) বিকেল ৪টায় অষ্টগ্রাম উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

সংবাদ সম্মেলনে অষ্টগ্রাম উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা ফজলুল হক হায়দারী বাচ্চু বলেন, গত শনিবার (১ জুলাই) বিএনপির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা ফজলুর রহমান ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে যোগদান করতে অষ্টগ্রাম জিরো পয়েন্টে আসেন। এ অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে অষ্টগ্রাম উপজেলা বিএনপির সভাপতি সৈয়দ আহমেদের নেতৃত্বে বিএনপিসহ এর অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা কয়েক শ লাঠির মাথায় পতাকা সম্বলিত একটি মিছিল নিয়ে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে জিরো পয়েন্টের দিকে যায়। সেখানে তাদের কী অনুষ্ঠান ছিলো এ বিষয়ে আমরা অবগত নই।
 
আগামী মঙ্গলবার (৪ জুলাই) সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের অষ্টগ্রামে আগমন উপলক্ষ্যে উপজেলা ছাত্রলীগ একই দিনে একটি স্বাগত মিছিল বের করে। মিছিলটি অষ্টগ্রামের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে জামতলী মোড়ে গেলে লাঠিসোঁটাসহ বিএনপির একটি মিছিল বিপরীত থেকে এসে উসকানিমূলক স্লোগান দিতে থাকে। ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা তখন পাল্টা স্লোগান দিলে দুই পক্ষের মধ্যে একটু বাগবিতণ্ডার সৃষ্টি হয়। পরবর্তীতে বিএনপির মিছিল থেকে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ এবং ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়। এতে ছাত্রলীগ -যুবলীগসহ প্রায় অর্ধ শতাধিক কর্মী আহত হন। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। 

তিনি আরও বলেন, এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী একটি সংবাদ সম্মেলন ও প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে অষ্টগ্রাম উপজেলা আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ সংগঠনের নেতৃবৃন্দকে সন্ত্রাস ও নৈরাজ্যবাদী বলে আখ্যায়িত করেন। তার বক্তব্যটি সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট। বিএনপি সব সময় মিথ্যাচার এবং নৈরাজ্যের রাজনীতিতে বিশ্বাসী। পরবর্তীতে এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটলে সঠিক সময়ে তার উচিত জবাব দেওয়া হবে। আমরা উপজেলা আওয়ামী লীগ এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।

উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শহীদুল ইসলাম জেমস বলেন, গত ১ জুলাইয়ের ঘটনা অষ্টগ্রামের রাজনৈতিক ইতিহাসে ন্যাক্কারজনক ঘটনার আবির্ভাব ঘটিয়েছে। এ উপজেলার মানুষ সহমর্মিতার রাজনীতিতে বিশ্বাসী ছিল। কিন্তু বিএনপির নেতাকর্মীরা তা নষ্ট করে দিয়েছে। বিএনপির অনুষ্ঠানস্থল বাজার থেকে অনেকটা দূরে। তারা কর্মসূচি শেষ করে ছাত্রলীগের ওপর যে হামলা করবে তা যদি আমরা জানতাম তাহলে আমরা প্রতিহত করার চেষ্টা করতাম। এ ঘটনায় যারা আহত হয়েছেন তাদের জবানবন্দি নিয়ে অষ্টগ্রাম মডেল থানায় একটি মামলা করা হয়েছে। সিসিটিভি ও বিভিন্ন জায়গা থেকে ঘটনার ফুটেজ নিয়ে ঘটনায় জড়িতদের আসামি করে মামলা করা হয়েছে। 

তিনি বলেন, ফজলুর রহমানের মতো একজন বিচক্ষণ রাজনীতিবিদের উপস্থিতিতে বিএনপি কর্তৃক এ ধরনের ঘটনা আমাদের মর্মাহত করেছে। আমরা এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই।

সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সায়েদুর রহমান সাঈদ, সাবেক আইন বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট ফাইজুল হক বিপ্লব, উপজেলা যুবলীগের সভাপতি (ভারপ্রাপ্ত) মীর শামীম রেজা, ছাত্রলীগের আহ্বায়ক শেখ তৌফিকুল ইসলাম তারিফ, যুগ্ম আহ্বায়ক শামসুল হক শামীমসহ বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

আরএআর