ভোলা-২ আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) আলী আজম মুকুলকে হত্যার হুমকি দেওয়ার অভিযোগে ইউপি চেয়ারম্যান আলাউদ্দিন সর্দারকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল বৃহস্পতিবার (৬ জুলাই) দিবাগত রাতে রাজধানী ঢাকার কদমতলী থানা এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে ভোলার বোরহানউদ্দিন থানায় নিয়ে আসা হয়। 

শুক্রবার (৭ জুলাই) বিকেলে বোরহানউদ্দিন থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনির হোসেন মিঞা বিষয়টি নিশ্চিত করেন। 

এর আগে গত ৩ জুন জনৈক এক ব্যক্তির সঙ্গে ভিডিওকলে কথা বলার সময় ভোলা-২ আসনের সংসদ সদস্য আলী আজম মুকুলকে প্রকাশ্যে হত্যার হুমকি দেন বোরহানউদ্দিন উপজেলার পক্ষিয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান ও উপজেলা যুবলীগের সাবেক সহ-সভাপতি আলাউদ্দিন সরদার। তার হুমকির সেই ভিডিও ফুটেজ তখন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।

হুমকির ৩১ সেকেন্ডের ওই ভিডিওতে আলাউদ্দিন সরদারকে বলতে শোনা যায়, ‘ইনশাআল্লাহ আমি দাঁড়াবো। এরপর যদি এমপি আলী আজম মুকুল কিছু করে, তাহলে আমি আপনাকে বলে রাখি, প্রকাশ্যে আমিই এমপি আলী আজমকে মেরে ফেলবো। আমি একাই তাকে মেরে ফেলবো, কাউকে লাগবে না।’

এ ঘটনায় এমপির নির্বাচনী এলাকা বোরহানউদ্দিন ও দৌলতখানে নেতাকর্মীদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। আলাউদ্দিনের কুশপুতুল দাহ করার পাশাপাশি একাধিকবার বিক্ষোভ মিছিল করেন স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা। ঘটনার পর কয়েক ধাপে তার বিরুদ্ধে তিনটি মামলা করা হয়। যদিও তাকে গ্রেপ্তারের কয়েকদিন আগে তিনি তার ফেসবুক লাইভে এসে জানিয়েছিলেন, তার বিরুদ্ধে যে কয়টি মামলা হয়েছে প্রতিটি মামলায় তিনি জামিনে আছেন। জামিনের পর থেকে তিনি ফেসবুকে সক্রিয় ছিলেন।

এদিকে গ্রেপ্তারকৃত চেয়ারম্যানের ছেলে রোহান ফেসবুকে লাইভে এসে জানান, তার বাবা আলাউদ্দিন সরদারের বিরুদ্ধে কোনো মামলার ওয়ারেন্ট নেই। তার বাবা প্রতিটি মামলায় জামিনে আছেন। এরপরও পুলিশ কী কারনে তাকে গ্রেপ্তার করেছে তা তারা জানেন না।

লাইভে রোহান দাবি করেন, পুলিশ তার বাবাকে গ্রেপ্তার করে বেধড়ক মারধর করেছে এবং বাসা তল্লাশি করে সব কিছু এলোমেলো করে রেখে গেছে। তার বাবাকে কোন মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে তা জানতে চাইলে পুলিশ তার দিকে তেড়ে আসে। এমপি আলী আজম মুকুল ক্ষমতার অপব্যবহার করে তার বাবাকে পুলিশ দিয়ে ধরে নিয়ে গেছে। 

বোরহানউদ্দিন থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনির হোসেন মিঞা জানান, অভিযুক্ত আলাউদ্দিন সরদার একটি মামলায় জামিনে আছেন। তার বিরুদ্ধে আরও দুইটি চাঁদাবাজি মামলা রয়েছে। সেসব মামলায় পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করেছে।

তবে আলাউদ্দিন সরদারকে কবে আদালতে তোলা হবে এবং পুলিশের পক্ষ থেকে কোনো রিমান্ড চাওয়া হবে কিনা এ বিষয়ে ওসি কোনো মন্তব্য করেননি।

আরএআর