মাদারীপুরের রাজৈরে ৫০টির বেশি পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। বৃষ্টির পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা ও যাতায়াতের নির্দিষ্ট পথ না থাকায় চারিদিকে পানি জমে ভোগান্তির শিকার হচ্ছে মানুষ।

রোববার (৯ জুলাই) দুপুরে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার পৌর শহরের সুফি জোনাবালী সড়কের পাশে আলমদস্তার এলাকার চারিদিকে বৃষ্টির পানি জমে আছে। এদিকে পানি নিষ্কাশনের কোনো ব্যবস্থা না থাকায় এই পানির মধ্য দিয়ে শিশু ও বৃদ্ধসহ সবাইকে চলাফেরা করতে হয়। তবে সেখানেও রয়েছে বিপত্তি। ঘর বা নিজ ভবন থেকে নিকটতম সড়কে যাওয়ার কোনো ব্যবস্থা নেই। গালমন্দ উপেক্ষা করে অন্যের জায়গা দিয়ে করতে হয় চলাফেরা। জায়গার মালিক তাদের লোহার গেট আটকিয়ে রাখলে ৫০টির বেশি পরিবার একেবারেই পানিবন্দি হয়ে পড়ে। যাতায়াত পথের অভাবে এ পরিবারগুলোর আবাসিক উন্নয়ন বন্ধ আছে দীর্ঘকাল। অনেকেই নিজ বাসভবন ছেড়ে অন্যত্র বাসা ভাড়া থাকছেন। যাতায়াত পথের অভাবে নির্মান সামগ্রী নিতে না পারায় কেউবা পাকা ভবন বা আবাসিক ভবন নির্মাণ করতে পারছে না বা অর্ধ নির্মিত অবস্থায় পড়ে আছে। এমনি কি আগুন লাগলে ফায়ার সার্ভিস বা মুমূর্ষ রোগী আনা নেওয়ার ক্ষেত্রে অ্যাম্বুলেন্সসের সহযোগিতা নেওয়া সম্ভব নয়।   

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ভুক্তভোগী এক নারী বলেন, পানির কারণে গৃহবন্দী হয়ে পড়েছি। মাত্র ১০০ গজ দূরে উপজেলার প্রধান সড়কে যেতে হলে অন্যের জায়গা ব্যবহার হয়। কোনো রকম মতবিরোধ বাধলে লোহার গেটটি আটকে দেয় তখন আমরা একেবারেই বন্দী হয়ে পড়ি। অন্যদিকে নিষ্কাশন ব্যবস্থা না থাকায় বর্ষার বৃষ্টি নামলে পানিবন্দী হয়ে পড়ি। রাস্তার অভাবে নির্মাণ সামগ্রী আনা-নেওয়া করতে না পাড়ায় বাড়িঘরের নির্মাণ কাজও বন্ধ হয়ে আছে।

আলমগীর হোসেন বলেন, ‘এত দিন অন্তত কিছু রাস্তাঘাট ভাসমান ছিল। এখন সব রাস্তা ডুবে গেছে। আমরা যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছি। বাড়ি থেকে মূল সড়কে উঠতে গেলে কোমরপানি ভেঙে যেতে হয়। এলাকার এমন কোনো বাড়ি নেই, যেখানে পানি ওঠেনি।
 
আব্দুর রহমান জানান, এ চরে ৬০টি পরিবারের বসবাস। জায়গাটি নিচু হওয়ায় এখানকার বেশির ভাগ ঘরবাড়িতে বৃষ্টি হলেই সমান পানি হয়। ঠিকমতো রান্না করতে না পারায় অনেককে একবেলা খেয়েই দিন পার করতে হচ্ছে।

যোগাযোগ বন্দী এ এলাকার বাসিন্দা অ্যাডভোকেট মফিজুর রহমান জানান, পৌরসভার সকল নীতি পালন করলেও আমরা নাগরিক সুবিধা পাচ্ছি না । এ সমস্যা সমাধানে পৌরসভার শরণাপন্ন হলেও সুরাহা পাচ্ছি না। আমরা এখন দুর্যোগের মধ্যে বসবাস করছি। বেশি বর্ষণ হলে অনেকের ঘরে পানি প্রবেশ করবে। 

অ্যাডভোকেট ফায়েজুর রহমান হিরু বলেন, অপরিকল্পিত বাড়ি-ঘর নিমার্ণের ফলে উদ্বুদ্ধ পরিস্থিতি অসহনীয় উঠেছে। রাস্তা ও ড্রেন নির্মাণ করলে পরিস্থিতির উন্নতি হতে পারে। 

রাজৈর পৌর মেয়র নাজমা রশিদ বলেন, সমস্যা সমাধানে ইতোপূর্বে রাস্তা নির্মাণের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। কিন্তু কিছু ব্যক্তির কারণে রাস্তা নির্মানকাজ থেমে যায়। পুনরায় সরেজমিনে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। 

রাকিব হাসান/আরকে