মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলার চরাঞ্চলে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে কাউসার আহমেদ নামের এক কলেজছাত্র গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। রোববার (৯ জুলাই) দুপুর ১২টার দিকে উপজেলার মোল্লাকান্দি ইউনিয়নের মাকহাটি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

আহত কাউসার খুলনার সানাউল্লাহ নূরীর ছেলে। তিনি তার  মা ফাতেমা বেগমের চাকরির সুবাদে মোল্লাকান্দি ইউনিয়নের নানাবাড়ি মহেশপুর গ্রামে থাকতেন। কাউসার মুন্সীগঞ্জ সরকারি হরগঙ্গা কলেজের মানবিক বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে মোল্লাকান্দি ইউনিয়নের বর্তমান ও সাবেক চেয়ারম্যান রিপন হোসেন এবং মহসিনা হক কল্পনার মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছে। এ দুটি পক্ষের বিরোধে ইউনিয়নের রাজনীতি এবং এখানকার মানুষজনও দুভাগে বিভক্ত। পূর্ব বিরোধকে কেন্দ্র  রোববার সকাল থেকে রিপন হোসেনের পক্ষের নাহিদ এবং মহসিনা হক পক্ষের ফয়সালদের মধ্যে উত্তেজনা চলছিল।

বেলা ১২টার দিকে পক্ষ দুটি মুখোমুখি হলে সংঘর্ষ শুরু হয়। এসময় মাকহাটি এলাকায় বন্ধুক, দেশীয় অস্ত্র নিয়ে ধাওয়া পাল্টা ও গোলাগুলি শুরু করে তারা। এ সময় কলেজছাত্র কাউসার ও তার মা ঘটনাস্থল দিয়ে মুন্সীগঞ্জের দিকে যাচ্ছিল। ওই পক্ষ দুটির ছোড়া গুলিতে আহত হয় কাউসার। তাকে উদ্ধার করে মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। পরে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।

আহত কলেজ শিক্ষার্থী কাউসারের মা ফাতেমা বেগম বলেন, তিনি মুন্সীগঞ্জ জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের একটি পদে কাজ করেন। আজকে মাকাহাটি গ্রামে করোনার টিকাদান কর্মসূচি ছিল। মাকাহাটিতে গোলাগুলি চলছিল। আমার ছেলে কাউসারসহ আমরা সেখান থেকে চলে আসছিলাম। এক পক্ষের ফয়সাল সর্দারের ছোড়াগুলিতে আমার ছেলের শরীর ঝাঝড়া হয়ে গেছে। আমার শরীরেও গুলি লেগেছে।

কাউসারের মা বলেন, আমরা কোনো পক্ষের নই। এর পরেও আমার ছেলেকে গুলি করলো। ফয়সাল সরকারসহ জড়িত সবার বিচার চাই।

ঘটনার পর থেকে আত্মগোপনে আছে ফয়সাল সর্দার। তার মুঠোফোনে ফোন করা হলে সেটি বন্ধ পাওয়া যায়।

সদর উপজেলা আ.লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদক মহসিনা হক ঘটনার নিন্দা জানান। তিনি বলেন, যে ছেলেটি গুলিবিদ্ধ হয়েছে সে নিরপরাধ। যে দুপক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়েছে তারা মাদকের সঙ্গে জড়িত। মাদকের ভাগ-বাটোয়ারা নিয়ে তাদের মধ্যে ঝামেলা হতে পারে। যাদের কারণে ওই কলেজছাত্র আহত হয়েছে, তাদের সবাইকে বিচারের আওতায় আনার দাবি জানান তিনি।

মোল্লাকান্দি ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক নাহিদ সিকদার বলেন, ওই এলাকার স্থানীয়দের মধ্যে সমস্যা হয়েছে। এখানে আমি কোনোভাবেই জড়িত নই। রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে আমার নামটি নিয়ে আসা হচ্ছে।

মুন্সীগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সদর সার্কেল থান্দার খাইরুল হাসান বলেন, প্রভাব বিস্তার করাকে কেন্দ্র করেই নাহিদ ও ফয়সাল পক্ষ সংর্ঘে জড়ায়। ঘটনার মধ্যখানে পড়ে গিয়ে ওই কলেজছাত্র গুলিবিদ্ধ হয়। ওই এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে। ঘটনার সঙ্গে যারা জড়িত তারা পলাতক রয়েছে। তাদেরকে আটক করতে পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে।

ব.ম শামীম/এমএএস