চাঁদা না পেয়ে ওষুধকে মদ দেখানোর অভিযোগ
রংপুর প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলন করছেন হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসক আসাদুজ্জামান মন্ডল
রংপুরে এক হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসককে মাদক ব্যবসায়ী বানানোর অভিযোগ উঠেছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের বিরুদ্ধে। মাসোহারা না দেওয়ায় পরিদর্শক মাহবুব রহমান ও এসআই তৌহিদুল ইসলাম হোমিও ওষুধ জব্দ করে চোলাই মদ দেখিয়ে মাদক মামলায় চিকিৎসককে ফাঁসিয়েছেন।
বুধবার (৩১ মার্চ) বিকেলে রংপুর প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে এমন অভিযোগ করেন আসাদুজ্জামান মন্ডল নামের হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসক।
বিজ্ঞাপন
তিনি বলেন, প্রতি মাসে পাঁচ হাজার টাকা করে চাঁদা চেয়ে বিভিন্ন সময়ে হুমকি দিয়ে আসছিলেন মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের এসআই আতিউর রহমান, এসআই নুর ইসলাম, এসআই তৌহিদুল ইসলাম ও পরিদর্শক মাহবুব। হোমিও ফার্মেসিতে রেক্টিফাইড স্পিরিটের লাইসেন্স থাকুক আর নাই থাকুক, তাদের দাবি করা টাকা দিতে হবে বলে বিভিন্নভাবে চাপ দেন।
টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করায় ক্ষিপ্ত হয়ে নানাভাবে হয়রানি করার একপর্যায়ে চেম্বার তল্লাশির করার কথা বলে ফার্মেসি থেকে প্রায় পাঁচ লক্ষাধিক টাকার ওষুধসহ কোম্পানির ক্রয় রশিদ জব্দ করেন এসআই তৌহিদুল ইসলাম ও পরিদর্শক মাহবুব রহমান। পরে ওই ঘটনায় ২০ লিটার চোলাই মদসহ আটকের অভিযোগ এনে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দেন তারা।
বিজ্ঞাপন
আসাদুজ্জামান আরও বলেন, প্রায় আট বছর ধরে চিকিৎসাসেবা দিয়ে আসছি। করোনা মহামারিতে বিনামূল্যে হাজার হাজার মানুষকে ওষুধ দিয়েছি। লকডাউনে যখন অন্য চিকিৎসকরা চেম্বার বন্ধ রেখেছেন, তখনো রোগীদের সেবায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ওষুধ ও চিকিৎসা দিয়েছি। যে ওষুধ দিয়ে মানুষের চিকিৎসা করে আসছি, সেই ওষুধকে পরিদর্শক মাহবুব চোলাই মদ বানালেন। চাঁদা না পেয়ে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে অন্যায় করেছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর। নিজেদের প্রতি সাধারণ মানুষের আস্থা নষ্ট করেছেন তারা।
বিচার বিভাগীয় তদন্ত করে মিথ্যা মামলাটি প্রত্যাহার এবং চাঁদা দাবি করা কর্মকর্তাদের শাস্তির আওতায় আনার দাবি জানান হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসক আসাদুজ্জামান মন্ডল। এ সময় সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ হোমিওপ্যাথিক ছাত্র অধিকার সংগঠনের বিভাগীয় কমিটির নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
ওই চিকিৎসকের তোলা অভিযোগ বানোয়াট ও ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের পরিদর্শক মাহবুব রহমান।
তিনি বলেন, সম্প্রতি বগুড়াসহ বিভিন্ন স্থানে রেক্টিফাইড স্পিরিট সেবন করে অনেকের মৃত্যু হয়। ওই ঘটনার পর রংপুরে লাইসেন্স ও লাইসেন্সহীন হোমিওপ্যাথিক চেম্বারগুলোতে নজরদারি বাড়ানোসহ বেশ কয়েকটি অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানে লাইসেন্স না থাকাসহ বেশ কিছু অভিযোগ তার বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। তবে ওই চিকিৎসক টাকা দাবি করার যে অভিযোগ এনেছেন; তা সম্পূর্ণ মিথ্যাও বানোয়াট।
ফরহাদুজ্জামান ফারুক/এএম