গাছে পাতার চেয়ে পাখিই বেশি
টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর ইবরাহীম খাঁ সরকারি কলেজ গেটের মূল ফটকের সামনে বাগান বিলাস গাছের ডালগুলোতে আশ্রয় নিয়েছে হাজার হাজার চড়ুই পাখি। কিচিরমিচির শব্দ এক মুহুর্তের জন্য হলেও পথচারী আর দর্শনার্থীদের অভিভূত করবে। তাই পাখিগুলো দেখতে আসে প্রকৃতি প্রেমী নানা বয়সী নারী পুরুষ।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, কলেজের মূল গেটে লাগানো বাগান বিলাস গাছের শাখায় শাখায় ঝুলে আছে রজনীকান্ত সেনের বিখ্যাত ছড়ার সেই চড়ুই পাখিগুলো। বাগান বিলাস গাছে আসার আগে পাশে থাকা দুটি গাছে ধীরে ধীরে জড়ো হতে থাকে পাখিগুলো। এরপর ঝাঁকে ঝাঁকে চলে আসে কলেজ গেটের গাছের ডালে। কিচিরমিচির শব্দ করে পাতার ভাজে বোঁটায় ঝুলে ঝুলে মধুর খোঁজে গাছে ফোটা রঙ-বেরঙের ফুলে ঠোঁট ঢোকাচ্ছে তারা। আবার আধাঘণ্টা পরই তাদের কিচিরমিচির শব্দ বন্ধ হয়ে যায়।
বিজ্ঞাপন
যার মহাসুখে অট্টালিকায় থাকার কথা সেই চড়ুই এখন আশ্রয় খুঁজে নিয়েছে গাছের শাখায়। ভূঞাপুর ইবরাহীম খাঁ সরকারি কলেজ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, প্রায় সাড়ে তিন বছর ধরে বিকেলের নির্দিষ্ট সময়ে পাখিগুলো দল বেঁধে আশ্রয় নেয় আবার ভোরের নির্দিষ্ট সময়ে দলে দলে উড়ে যায় খাদ্যের সন্ধানে। স্থানীয় বা নাগরিকরাও যান্ত্রিকতার শব্দ দুষণ থেকে স্বস্তি পেতে ছুটে আসেন পাখির কলরব শুনতে এবং দেখতে। দুইদণ্ড দাঁড়িয়ে প্রাণ ভরে অবলোকন করেন পাখিদের জীবনের গান।
বিজ্ঞাপন
স্থানীয় সংবাদকর্মী তানভীর আহম্মেদ বলেন, পাখিদের কোনো অভয়াশ্রম নেই। কলেজের গেটেই এই জায়গাটাকে পাখিগুলো নিরাপদ মনে করেন। যে কারণে অনেকগুলো পাখি এখানে এসে আশ্রয় নিয়েছে।
পাখি দেখতে আসা দর্শনার্থীরা জানান, বিকেলের সময় পাখির কলরব সত্যিই মনোমুগ্ধকর। অবাদে গাছগুলো কেটে ফেলার কারণে পাখিরা নিরাপদ আশ্রয় নেই। এরকম পাখির শব্দ কোথাও পাওয়া যায় না। প্রকৃতি ও পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রাখতে এবং পাখিদের অভয়াশ্রম তৈরি বাস উপযোগী বেশি বেশি গাছ লাগানোর উদ্যোগ নিতে হবে।
ইবরাহীম খাঁ সরকারি কলেজের মনোবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক এসএম জাহিদুল ইসলাম বলেন, নির্দিষ্ট সময়ে আসা পাখিরা আবার কোথায় যেন চলে যায়। এদের কিচিরমিচির শব্দ মনকে ভরিয়ে তোলে। তাই এইসব পাখিগুলোকে যাতে কেউ বিরক্ত না করে সে ব্যাপারে আমরা সজাগ থাকি।
ইবরাহীম খাঁ সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক মো. কামরুজ্জামান সরকার বলেন, এই জায়গার পাখিরা সময় মেনে চলে। সঠিক সময় যায় সঠিক সময়ে আসে। পাখির এমন মিলনমেলা দেখে আরও কলেজের বিভিন্ন জায়গায় এমন আবাসস্থল নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
অভিজিৎ ঘোষ/আরকে