‘আমি হুজুরের বিচার চাই’
ছাত্রদের সঙ্গে পুকুরে ওজু করতে না যাওয়ায় বাগেরহাটের শরণখোলায় নবম শ্রেণির এক ছাত্রীকে বেধড়ক মারধরের অভিযোগ উঠেছে মাদরাসা সুপারের বিরুদ্ধে। মারধরের এক পর্যায়ে ওই ছাত্রী অজ্ঞান হয়ে যান। তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। বুধবার (২৬ জুলাই) দুপুরে ওই উপজেলার খাজা এজিএম দাখিল মাদরাসায় এ ঘটনা ঘটে।
আহত শিক্ষার্থীর নাম আবিদা সুলতানা। সে শরণখোলা উপজেলার উত্তর তাফালবাড়ি গ্রামের মাওলানা এমাদুল হকের মেয়ে। এ ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকসহ এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। এলাকাবাসী ও অভিভাবকরা মাদরাসা সুপার মাওলানা ওবায়দুল হক সেলিমের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন।
বিজ্ঞাপন
আহত আবিদা সুলতানা জানায়, আমাদের মাদরাসা সুপার মাওলানা ওবায়দুল হক হুজুর দুপুরে সব শিক্ষার্থীদের এক সঙ্গে পুকুরে ওজু করতে যেতে বলেন। ছেলেদের সামনে মুখ খুলতে হবে তাই পুকুরে ওজু করতে যেতে চাইনি। তাই হুজুর আমাকে মাদরাসা ভবনের দোতলা থেকে মারতে মারতে পুকুরের কাছে নিয়ে যাযন। সেখানে নিয়ে পিঠে মাথায় এবং শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করতে থাকেন। আমাকে পুকুর ঘাটের পাশে একটি গাছের উপর নিয়ে ফেলে দেন। আমি সেখানে অজ্ঞান হয়ে যাই। পরে আমাকে আহত অবস্থায় মাদরাসার একটি কক্ষে অনেকক্ষণ আটকে রাখা হয়। যেভাবে আমাকে মারা হয়েছে তাতে আমি মরেই যেতাম। আমি হুজুরের বিচার চাই।
আবিদা সুলতানার বাবা মাওলানা এমাদুল হক বলেন, আমার মেয়ে মাদরাসার মেধাবী ছাত্রী। বুধবার দুপুরে হুজুর যখন সব ছেলে মেয়েদের এক সঙ্গে ওজু করতে যেতে বলেছেন তখন আমার মেয়ে অন্য মেয়েদের হয়ে প্রতিবাদ করেছে। এজন্য আমার মেয়েকে এভাবে নির্যাতন করা হয়েছে। মাদরাসা সুপার আমার মেয়েকে মারধর করে সেটা ধামাচাপা দেওয়ার জন্য হাসপাতালে না নিয়ে মাদরাসার কক্ষে আটকে রাখেন। পরে আমার ছেলে রেদওয়ান খবর পেয়ে মেয়েকে উদ্ধার করে হাসপালে ভর্তি করে। আমার মেয়ের নির্যাতনকারীর দৃষ্টান্তমূলক বিচার চাই।
বিজ্ঞাপন
অভিযুক্ত মাদ্রাসা সুপার মাওলানা ওবায়দুল হক সেলিমের মোবাইল ফোনে বারবার যোগাযোগের চেষ্টা করলেও নাম্বারটি বন্ধ পাওয়া যায়।
শরণখোলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ইকরাম হোসেন বলেন, আমাদের কাছে এখনো এই বিষয়ে কেউ কোনো অভিযোগ করেননি। অভিযোগ করলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
শেখ আবু তালেব/আরকে