একসঙ্গে এসএসসি পরীক্ষা পাস করলেন মা-ছেলে। তারা একই স্কুল থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিলেন। ফলাফলে মা লিপি আক্তার হাসি (৪০) পেয়েছেন জিপিএ-৪.৫৪ এবং ছেলে লিয়াকত হোসেন হৃদয় (১৬) পেয়েছে জিপিএ-৫। এমন সাফল্যে সবার প্রশংসায় ভাসছেন মা-ছেলে।

শুক্রবার (২৮ জুলাই) বেলা ১১টার দিকে ফল প্রকাশের পর মা-ছেলের সাফল্যের বিষয়টি প্রকাশ পায়। তারা পার্শ্ববর্তী সিংড়া উপজেলার সোনাপুর গ্রামের বাসিন্দা। এছাড়া লিপি আক্তার সিংড়ার চামারী ইউনিয়নের ইউপি সদস্য।

জানা গেছে, লিপি আক্তার হাসি ও লিয়াকত হোসেন হৃদয় নাটোরের গুরুদাসপুরের নাজিরপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। তারা ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষে রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের অধীনে অনুষ্ঠিত এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেন। 

বিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ফলাফলে মা লিপি আক্তারের চেয়ে এগিয়ে ছেলে লিয়াকত। লিয়াকত পেয়েছেন জিপিএ-৫ এবং মা লিপি আক্তার পেয়েছেন জিপিএ- ৪.৫৪। তারা বিজ্ঞান বিভাগের পরীক্ষার্থী ছিলেন।

লিপি আক্তার হাসি জানান, লেখাপড়ার অনেক ইচ্ছা ছিল। অর্থকষ্টে বাবার বাড়িতে সে ইচ্ছা পূরণ হয়নি। সংসারে তার দুই সন্তান রয়েছে। স্বামীর অনুপ্রেরণায় ছেলে লিয়াকতের সঙ্গে নাজিরপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছিলেন। বছর পাঁচেক আগে স্বামী লোকমান মারা যাওয়ায় চরম অর্থকষ্টের মধ্যে পড়েন। তবুও হাল ছাড়েননি। সন্তানের সঙ্গে পড়াশোনা চালিয়ে গেছেন। শুক্রবার দুপুর এসএসসি পাসের খবর পান তিনি। খবর শুনে আনন্দে চোখের জল গড়িয়ে পড়েছে। একই সঙ্গে এসএসসি পাস করে তারা এলাকায় সাড়া ফেলেছেন। ফল প্রকাশের পর আশপাশের মানুষ দেখতে আসছেন। অভিনন্দন জানাচ্ছেন।

ছেলে লিয়াকত হোসেন হৃদয় জানায়, তার বড় বোন বিজ্ঞান বিভাগ থেকে এইচএসসি পরীক্ষা দেবেন। সে এবং তার মাও বিজ্ঞান বিভাগেই লেখাপড়া করেছে। একসঙ্গে লেখাপড়া করেছে তারা। সাফল্যও পেয়েছে একসঙ্গে। 

নাজিরপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফরিদ উদ্দিন মন্ডল জানান, মা-ছেলে দুজনের এই সাফল্য সমাজের জন্য অনুপ্রেরণার।

গুরুদাসপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শ্রাবণী রায় বলেন, মা-ছেলের সাফল্যের কথা শুনেছি। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাদের সব ধরনের সহায়তা দেওয়া হবে।

শাহিনুল আশিক/আরএআর