রাজি নদীর বুকে পুকুর খনন
রাজি নদীর মাঝখান দলখ করে পুকুর খনন করা হয়েছে
নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলার সুপরিচিত নদী রাজেশ্বরী নদী। তবে স্থানীয় লোকজনের কাছে এটি রাজি নদী হিসেবে পরিচিত। কিছুকাল আগেও এ নদীতে স্রোতের প্রবাহ ছিল। চলাচল করত যাত্রীবাহী ও মালবাহী ছোট-বড় অসংখ্য নৌকা। কিন্তু সময়ের আবর্তে প্রবাহ হারিয়েছে নদীটি। নেই আগের মতো সেই স্রোতের কোলাহল। বন্ধ হয়ে গেছে নৌকা চলাচলও।
এ সুযোগে নদীতীরবর্তী গ্রামগুলোর লোকজন নদী দখলের উৎসবে মেতেছেন। কেউ নদী দখল করে ফসলি জমিতে পরিণত করছেন আবার কেউ নদী দখল করে খনন করেছেন পুকুর।
বিজ্ঞাপন
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কেন্দুয়া উপজেলার কান্দিউড়া ইউনিয়নের ব্রাহ্মণজাত ও পালড়া এলাকায় রাজি নদী দখল করে একাধিক পুকুর খনন করেছেন স্থানীয় ব্যক্তিরা। এর মধ্যে ব্রাহ্মণজাত গ্রামের তহুর মিয়া নামের এক ব্যক্তি রাজি নদী দখল করে পুকুর খনন শুরু করেছেন। এ ছাড়া আরও আগেই রাজি নদী দখল করে পুকুর খনন করে ভোগ করে আসছেন একই গ্রামের আবু সাঈদ মল্লিক, আবদুর রহিম ও পালড়া গ্রামের রফিক উদ্দিন মল্লিক।
ব্রাহ্মণজাত ও পালড়া গ্রামের বাসিন্দাদের মতো আশপাশের গ্রামগুলোর লোকজনও রাজি নদীর বিভিন্ন অংশ দখলে নিয়ে পুকুর খননসহ ফসলি জমিতে পরিণত করার মাধ্যমে ভোগ করে আসছেন বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে।
বিজ্ঞাপন
এ বিষয়ে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক রহিছ উদ্দিন ঢাকা পোস্টকে জানান, রাজি নদী এখন মরা খালে পরিণত হয়েছে। নদীতীরবর্তী গ্রামগুলোর বাসিন্দারা নদী দখল করে পুকুর খনন করছে। আবার কোথাও নদী দখলে নিয়ে ফসলি জমিতে পরিণত করছে। স্থানীয় সচেতন লোকজনের বাধা-নিষেধও তারা মানছে না। তাই নদীর জায়গা উদ্ধারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। তা না হলে কিছুদিন পর আর নদীর অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যাবে না বলেও জানান তিনি।
কথা হয় নদী দখল করে পুকুর খনন করা ব্রাহ্মণজাত গ্রামের বাসিন্দা তহুর মিয়ার সঙ্গে। অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি জানান, নদীর পাড়ে আমাদের জমি রয়েছে। আমরা আমাদের জমিতেই পুকুর খনন করছি। একসময় তাদের জমির পাশ ঘেঁষে রাজি নদী প্রবাহিত হলেও দীর্ঘদিন আগে থেকেই প্রবাহ বন্ধ হয়ে গেছে বলেও জানান তিনি।
এ বিষয়ে কেন্দুয়া উপজেলা ভূমি অফিসের সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. খবিরুল আহসান ঢাকা পোস্টকে বলেন, নদী দখল করে পুকুর খনন করা বা নদীর জায়গা ফসলি জমিতে পরিণত করা সম্পূর্ণ বেআইনি এবং অপরাধ। নদী দখলমুক্ত করতে এবং নদীর জায়গা উদ্ধারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এ ছাড়া নদী দখলকারীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থাও নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।
মো. জিয়াউর রহমান/এনএ