রেলের শহর হিসেবে পরিচিত রাজবাড়ী জেলা। পদ্মা সেতুর সুবাদে রাজবাড়ী থেকে ভাঙ্গা হয়ে রাজধানী ঢাকার সঙ্গে রেল যোগাযোগ হবে দ্রুতগামী। সর্বোচ্চ দুই ঘণ্টার মধ্যে যাত্রীরা রাজবাড়ী থেকে ঢাকায় পৌঁছাতে পারবেন। এর ফলে রাজবাড়ীতে রেলওয়ের বৃহৎ আকারের ওর্য়াকশপ নির্মাণ করা হবে। এই ওয়ার্কশপ নির্মাণকে কেন্দ্র করে প্রায় ৭০০ পরিবারের ভূমি অধিগ্রহণ করা হবে। রেলওয়ে কর্তৃক ভূমি অধিগ্রহণের প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছে এলাকাবাসী।

সোমবার (৭ আগস্ট) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে রাজবাড়ী প্রেসক্লাবের সামনে রাজবাড়ী পৌরসভার ২নং ওয়ার্ড নূরপুর ও দাদশী ইউনিয়নের ২ নং ওয়ার্ডের ছোট নূরপুর এলাকাবাসীর উদ্যোগে এ মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়। মানববন্ধন শেষে এলাকাবাসী রাজবাড়ীর জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের কাছে স্মারকলিপি দেন। 

মানববন্ধনে বক্তব্য দেন রাজবাড়ী পৌরসভার ২ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আব্দুল্লাহ আল মামুন সম্রাট, রাজবাড়ী পৌরসভার সংরক্ষিত ১, ২, ও ৩ ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ফারজানা আক্তার ডেইজি, দাদশি ইউনিয়ন পরিষদের ২ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. শফিকুল ইসলাম শফি, সমাজসেবক গোলাম মওলা, রাজবাড়ী পৌরসভার ২ নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর এফ এম শাহজাহান প্রমুখ।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, আমরা দেশের উন্নয়ন চাই, কিন্তু আমাদের ক্ষতি করে, ভিটেমাটি থেকে উচ্ছেদ করে দেশের উন্নয়ন হোক এটা চাই না। আমরা আমাদের বাপ-দাদার ভিটেমাটি ছাড়তে চাই না। রেল রেলের জায়গায় উন্নয়ন করুক, আমাদের জায়গায় কেনু? তারা তাদের জায়গায় যা ইচ্ছা তাই করুক। কিন্তু সেটা না করে তারা আমাদের প্রায় ৭০০ পরিবারকে নোটিশ করেছে। আমাদের জায়গা জমি ছেড়ে দিতে হবে। আমরা অবিলম্বে রেলের এই সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করার আহ্বান জানাচ্ছি। এই সিদ্ধান্ত পরিবর্তন না হলে তীব্র আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।

রাজবাড়ী পৌরসভার ২ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আব্দুল্লাহ আল মামুন সম্রাট বলেন, রাজবাড়ী শহরে রেলের পর্যাপ্ত জায়গা রয়েছে। তারপরও রেল কর্তৃপক্ষ ব্যক্তি মালিকানা জমি দখলের চেষ্টা করছে। 
আমাদের মনে হয় একটি কুচক্রী মহল তাদের স্বার্থ হাসিলের জন্য এই প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। আমরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও রেল কর্তৃপক্ষকে বলতে চাই তারা সরেজমিনে এসে সঠিক তদন্ত করুক। যাতে এই ৭০০ পরিবার তাদের বাপ-দাদার ভিটেমাটি থেকে উচ্ছেদ না হয়। রেলের যতটুকু জায়গা রয়েছে সেই জায়গার মধ্যেই ওয়ার্কশপ করা সম্ভব। কিন্তু তারপরও তারা ব্যক্তি মালিকানাধীন জায়গায় নজর দিচ্ছে। তাদেরকে উচ্ছেদের পাঁয়তারা করছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। 

মানববন্ধন শেষে এলাকাবাসী মিছিল নিয়ে রাজবাড়ীর জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের কাছে স্মারকলিপি দেন। 

মীর সামসুজ্জামান/আরএআর