পঞ্চগড়ে মাদক সেবনের টাকা না পেয়ে মাছ শিকারের খোঁচা (মাছ ধরার অস্ত্র) দিয়ে আক্রমণ করে নিজ মাকে হত্যা করে পালিয়ে গেলেন শহিদুল ইসলাম (৩৫) নামের এক মাদকাসক্ত যুবক। শনিবার (৩ এপ্রিল) দুপুরে সদরের মিঠাপুকুর এলাকায় এ ঘটনাটি ঘটে। নিহত জয়তুন বেগম ওই এলাকার আবদুল মজিদের স্ত্রী।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, ওই গ্রামের আব্দুল মজিদের ছেলে শহিদুল ইসলাম নিয়মিত মাদক সেবন করতেন। ঘটনার দিন সকাল থেকে শহিদুল তার মা জয়তুন বেগমের কাছে মাদক সেবনের টাকা চেয়ে আসছিলেন। তার মা টাকা দিতে অস্বীকার করেন। দুপুরের দিকে বাড়িতে কেউ না থাকার সুযোগে শহিদুল মাছ শিকারের অস্ত্র দিয়ে তার মায়ের ঘাড়ে আঘাত করেন।

এতে তার মা জয়তুন বেগম মাটিতে লুটিয়ে পড়ে চিৎকার করেন। পরে স্থানীয়রা দ্রুত তার বাড়িতে গেলে কোঁচা নিয়ে দ্রুত পালিয়ে যান ঘাতক শহিদুল ইসলাম। এদিকে স্থানীয়রা দ্রুত ঘটনাস্থল থেকে জয়তুন বেগমকে দ্রুত উদ্ধার করে পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি করলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. রকিবুল হাসান তাকে মৃত ঘোষণা করেন। পরে লাশের প্রাথমিক সুরতহাল শেষে পুলিশ লাশটি ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করেন। 

পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে মেডিকেল অফিসার ডা. রকিবুল হাসান বিষয়টি নিশ্চিত করে ঢাকা পোস্টকে জানান, ওই নারীকে হাসপাতালে নিয়ে আসার আগে তার মৃত্যু হয়। আমরা প্রাথমিকভাবে মৃত ওই নারীর ঘাড়ে ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন পেয়েছি। ময়নাতদন্তের পর বিস্তারিত জানা যাবে।

শহীদুলের বাবা আবদুল মজিদ বলেন, শহিদুল তার মায়ের কাছে টাকা চেয়েছিল কিন্তু টাকা তো আমার কাছে। টাকা না পেয়ে সে তার মাকে আঘাত করে হত্যা করেছে। সে প্রায় এমন মারধর করত আমাদের। সে তার মাকে মেরে পালিয়ে গেছে।

স্থানীয়রা জানান, এর আগেও শহিদুল মাদকের টাকা না পেলেই বাবা-মাকে মারধর করতেন। এ জন্য পরিবারের লোকজন কয়েকবার তাকে পুলিশেও তুলে দেন। এক বছর ধরে মাদক মামলায় জেলহাজতেই ছিলেন তিনি। মাস দুয়েক আগে বের হয়েই আবার শুরু করেন মাদক সেবন। 

এদিকে খবর পেয়ে হাসপাতাল ও ঘটনাস্থলে পরিদর্শন করেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) এস এম সফিকুল ইসলাম। তিনি ওই নারীর মৃত্যু বিষয়টি নিশ্চিত করে ঢাকা পোস্টকে জানান, খবর পেয়ে আমরা হাসপাতাল ও ঘটনাস্থলে এসেছি। আমাদের টিম কাজ করছে। শহিদুলকে আটকের চেষ্টা চলছে।

মো. রনি মিয়াজী/এনএ