দক্ষিণাঞ্চলে উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। গত বছরের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ। করোনার প্রথম ঢেউ শেষ হওয়ার পর অনেকটা রোগী শূন্য ছিল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল। চলতি বছরের ২৮ জানুয়ারি করোনা ইউনিট থেকে চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফেরেন মঠবাড়িয়ার খালেদা বেগম। এরপর দুই মাস করোনা ইউনিট সম্পূর্ণ খালি ছিল। ৭ মার্চ করোনা ওয়ার্ডে একজন ভর্তি হন। তার পর থেকে বেড়েই চলছে করোনা রোগীর সংখ্যা।

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছেন, জোড়াতালি দিয়ে চালাতে হচ্ছে করোনা ইউনিট। এমনিতেই জনবল সংকট। তার ওপরে আরও দেড়শ’ শয্যা বাড়িয়ে স্থাপন করা হয়েছে করোনা ইউনিট। জনবল বাড়েনি একজনও। করোনার দ্বিতীয় ঢেউ কীভাবে মোকাবিলা করবেন তা নিয়ে বিপাকে আছেন তারা।

শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. মনিরুজ্জামান শাহীন জানিয়েছেন, আমাদের যা আছে, তা দিয়েই চেষ্টা করছি, জানি না কতটুকু মোকাবিলা করতে পারি। তিনি বলেন, করোনা ওয়ার্ডের জন্য নতুন করে চিকিৎসক, নার্স, আয়া, পরিচ্ছন্নতাকর্মী সংযুক্ত করা হয়নি। যে জনবল রয়েছে তা দিয়েই করোনা ইউনিট চালাতে হচ্ছে।

শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানান, করোনা সংকট মোকাবিলায় গত বছর ৪০ জন ডাক্তার সংযুক্ত করা হলেও প্রথম ঢেউ শেষ হওয়ার আগেই এরা নিজেদের পছন্দমতো স্থানে বদলি হয়ে গেছেন। করোনা আক্রান্ত রোগীদের জন্য অত্যান্ত গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে হাই ফ্লো ন্যাজাল ক্যনুলা। শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ২২টি ক্যানুলা থাকলেও ১০টি বিকল। আইসিইউ থাকলেও তা পরিচালনার জন্য নেই টেকনিশিয়ান।

হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক ডা. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, আমাদের অনেক কিছুই নেই। সংকটকালীন সময়ে হাসপাতালে পরিচালক নেই।

হাসপাতালের করোনা ইউনিট সূত্রে জানা গেছে, শনিবার (৩ মার্চ) বিকেল সাড়ে চারটা পর্যন্ত ১১৮ জন রোগী চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এরমধ্যে ২০ জন করোনা আক্রান্ত। বাকি ৯৮ জন উপসর্গ নিয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন। গত ২৪ ঘণ্টায় এই ইউনিটে মোট ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে, যার মধ্যে একজন করোনা আক্রান্ত ছিলেন। বাকি চারজন করোনার উপসর্গ নিয়ে মারা যান।

হাসপাতালে ভর্তি এক রোগীর স্বজন জানান, করোনা ইউনিটে মেঝেতেও পা ফেলার জায়গা হচ্ছে না। বেড না পেয়ে অনেকেই মেঝেতে চিকিৎসা নিচ্ছেন। তিনি বলেন, মাত্র দুইজন নার্স দায়িত্ব পালন করছে। ডাক্তার ঠিকমতো আসছে না।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের বরিশাল বিভাগীয় পরিচালক ডা. বাসুদেব কুমার দাস জানান, গত ২৪ ঘন্টায় পটুয়াখালী জেলার দুইজন করোনা আক্রান্ত রাগী মারা গেছেন। নতুন করে শনাক্ত হয়েছে ৫৮ জন।

সৈয়দ মেহেদী হাসান/এমআইএইচ