বর্ধিত সভায় বসতে না দেওয়ায় ছাত্রলীগ নেতার কাণ্ড
ইনসেটে মইন উদ্দিন
কক্সবাজার জেলা ছাত্রলীগের বর্ধিত সভায় বসতে চেয়ার না দেওয়ায় ক্ষোভে পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন কক্সবাজার জেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি মইন উদ্দিন। বৃহস্পতিবার (২৪ আগস্ট) বিকেল ৫টার দিকে ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে তিনি পদতাগের ঘোষণা দেন।
বর্ধিত সভায় মইন উদ্দিনকে বসতে না দেওয়ার প্রতিবাদ জানিয়ে সড়ক অবরোধ করে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করেন তার অনুসারীরা। এতে সড়কের দুই প্রান্তে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। এ সময় তারা বিভিন্ন স্লোগানে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসাইন ও সাধারণ সম্পাদক মারুফ আদনানের কমিটিকে অবৈধ ঘোষণা করে বিলুপ্ত করার দাবি জানান।
বিজ্ঞাপন
বিক্ষোভকারী মইন উদ্দিনের অনুসারী ছাত্রলীগ নেতা জসিম উদ্দিন বলেন, বর্ধিত সভা গতকাল হওয়ার কথা থাকলেও জেলা ছাত্রলীগ আজ লোক দেখানো একটি বর্ধিত সভার আয়োজন করে। এ সময় সহ-সভাপতি মইন উদ্দিন উপস্থিত হলে সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক তাকে অপমান করার উদ্দেশ্যে বসার জন্য একটি চেয়ারও দেননি। অথচ জুনিয়র অনেক নেতাকর্মী সামনের সারিতে বসা ছিল। এমন ক্ষোভে সভা থেকে ফিরে তাৎক্ষণিক পদত্যাগের ঘোষণা দেন মইন উদ্দিন। জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম ও সাধারণ সম্পাদক মারুফ আদনানের স্বেচ্ছাচারিতার প্রতিবাদ জানাতে তারা রাস্তায় টায়ার জ্বালিয়ে সড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভ করছেন।
ছাত্রলীগ সহসভাপতি মইন উদ্দিন জানান, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নানা বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের ফলে সংগঠনের ভাবমূর্তি ক্রমাগত ক্ষুন্ন হচ্ছে। তাদের নোংরা কাজের কারণে নষ্ট হচ্ছে সংগঠনের ভাবমূর্তি। বর্তমান কমিটি নানা সময়ে বিভিন্ন বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে এবং কমিটির সর্বোচ্চ পদধারীরা ব্যক্তিগত কারণে নেতিবাচকভাবে বারবার সমলোচিত হয়ে ছাত্রলীগের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করছেন। আজ আমি আমাদের এক বর্ধিত সভায় যাই। সেখানে সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক আমাকে বসতে চেয়ার দেয়নি। তাই পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছি।
বিজ্ঞাপন
এদিকে পদত্যাগের ঘোষণায় তার অনুসারীরা কক্সবাজারেন প্রধান সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন। এতে প্রায় ঘণ্টাব্যাপী সড়ক বন্ধ ছিল। পরে মইন উদ্দিনকে নিয়ে মহেশখালী-কুতুবদিয়া আসনের সংসদ সদস্য আশেক উল্লাহ রফিক ঘটনাস্থলে এসে তাদের শান্ত করেন।
সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে মইন উদ্দিন তার ফেসবুক আরেকটি পোস্ট করেন। তিনি উল্লেখ করেন- ছাত্রলীগের সংগ্রামী কেন্দ্রীয় সভাপতি সাদ্দাম হোসেন ভাইয়ের নির্দেশে আমার পদত্যাগ করা ফেসবুক পোস্ট প্রত্যাহার করে নিয়েছি। এ ধরনের পদত্যাগের সুযোগ নেই উল্লেখ করে তিনি আমাকেসহ সকল নেতাকর্মীকে শান্ত থাকার নির্দেশ দিয়েছেন। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক সিরাজুল মোস্তফা, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ড. ফরিদুল ইসলাম চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমান মহোদয়ের নির্দেশনায় সড়ক থেকে নেতাকর্মীদের সরিয়ে দিয়েছি। আমার জন্য কোন জনদুর্ভোগকে আমি সমর্থন করি না। সংসদ সদস্য আশেক উল্লাহ রফিক ভাইয়ের সঙ্গে অবরোধস্থলে গিয়ে নেতাকর্মীদের অনুরোধ করি রাস্তা থেকে সরে যাওয়ার। আমার অনুরোধে ঘরে ফিরে যাওয়ায় তাদের ধন্যবাদ। আমি ছাত্রলীগের মইন, ছাত্রলীগই আমার ঠিকানা।
কক্সবাজার সদর মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলাম বলেন, ছাত্রলীগের কিছু কর্মী টায়ার জ্বালিয়ে সড়ক অবরোধ করে আন্দোলন করেছে। পরে আমি ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদের শান্ত করেছি। পরিস্থিতি এখন স্বাভাবিক রয়েছ।
সাইদুল ফরহাদ/আরএআর