ফরিদপুরে সরকারি রাজেন্দ্র কলেজের ছাত্রাবাসে বহিরাগতদের হামলার ঘটনা ঘটেছে। এ সময় কলেজের তিন ছাত্রকে কুপিয়ে জখম করা হয়। ছাত্রাবাসের তিনটি কক্ষ ভাঙচুর এবং টিভি রুম তছনছ করা হয়। 

বুধবার (৬ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে শহরতলীর বায়তুল আমান এলাকায় অবস্থিত সরকারি রাজেন্দ্র কলেজের অনার্স শাখায় এ ঘটনা ঘটে। হামলার শিকার হয়েছে কবি জসীমউদ্দিন ছাত্রাবাস।

ওই কলেজের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসী সুত্রে জানা গেছে, কলেজের মাঠে প্রতিদিন ছাত্রদের পাশাপাশি স্থানীয়রাও ফুটবল খেলেন। বুধবার বিকেলে ফুটবল খেলার সময় ছাত্রদের বলটি এলাকাবাসী মাঠের যে অংশে ফুটবল খেলছিল সে অংশে গেলে স্থানীয়রা বলটি জব্দ করে। এ নিয়ে কলেজের শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসীর মধ্যে বাদানুবাদ হয়।

এর জের ধরে সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে ওই এলাকার অর্ধ শতাধিক তরুণ জসীম উদ্দিন ছাত্রবাসে গিয়ে ছাত্রদের কক্ষ ভাংচুর শুরু করে। এ সময় ছাত্ররা বাধা দিলে তাদের ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে জখম করা হয়। হামলাকারীরা টিভি রুম তছনছ করে এবং টেলিভিশন সেট ভেঙে ফেলে। খবর পেয়ে ফরিদপুর কোতয়ালী থানা পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

বহিরাগতদের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে আহত কলেজের শিক্ষার্থী মো. শাকিল মৃধা (২৩), তুষার মাহমুদ (২৪) ও মো. রেজা মিয়া (২০) আহত হন। তারা ফরিদপুর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা নেন।

ফরিদপুর জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল চিকিৎসক গণেশ কুমার আগরওয়ালা বলেন, আহত শিক্ষার্থীদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

ওই ছাত্রাবাসের শিক্ষার্থীরা জানান, এ ঘটনা ঘটিয়েছেন ফরিদপুর পৌরসভার ২৬ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য মো. আব্দুল হকের অনুসারীরা। ওই কাউন্সিলরের দাপটে তার সমর্থক তরুণরা কোনো কিছু পরোয়া করেন না।

অভিযোগ সম্পার্কে কাউন্সিল আব্দুল হক বলেন, আমি ঘটনার সময় এলাকায় ছিলাম না। তবে শুনেছি এলাকায় একটা মারামারি হয়েছে। এ ঘটনা শুধু তার এলাকার লোকজন নয় অন্য এলাকার তরুণরাও জড়িত ছিল বলে দাবি করেন তিনি। এ ঘটনা যারা ঘটিয়েছে তারা তার অনুসারী- এ অভিযোগ সম্পর্কে আব্দুর হক বলেন, আমি ওই এলাকার কাউন্সিলর। সে হিসেবে ওই এলাকার সকলেই আমার লোক।

সরকারি রাজেন্দ্র কলেজের অধ্যক্ষ অসীম কুমার সাহা বলেন, ছাত্রদের পিটানো হয়েছে, কুপিয়ে জখম করা হয়েছে, কক্ষ তছনছ করা হয়েছে। এ ব্যাপারে আমি মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছি।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে ফরিদপুর কোতয়ালী থানার ওসি এম এ জলিল বলেন, ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে কলেজের ছাত্রাবাসে বহিরাগতরা হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করেছে। এ সময় সাত-আট শিক্ষার্থীকে মারপিট করা হয়েছে। এর মধ্যে তিনজন হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন।

তিনি বলেন, যারা এ হামলার সাথে জড়িত তাদের নাম সংগ্রহ করে দুটি বাড়িতে অভিযান চালানো হয়েছে। তবে কাউকে আটক করা যায়নি। চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। 

জহির হোসেন/