নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, শুধু বাংলাদেশের ওপর পশ্চিমাদের চাপ নয়, পশ্চিমাদের ওপরও বাংলাদেশের চাপ রয়েছে। আমরা আলোচনার টেবিলে স্বাধীন হয়নি, যুদ্ধ করে স্বাধীন হয়েছি। এই দেশ অন্য দেশের কথায় চলবে না। জনগণের কথা এবং সংবিধান অনুযায়ী চলবে।

বুধবার (২০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে কুড়িগ্রামে চিলমারী-রৌমারী নৌরুটে ফেরিঘাট ও ফেরি সার্ভিস উদ্বোধনকালে সাংবাদিকের তিনি এসব কথা বলেন।

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) আয়োজনে বুধবার দুপুরে চিলমারী নৌবন্দর এলাকায় সুধী সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় বক্তব্য দেন নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন, বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্পোরেশনের (বিআইডব্লিউটিসি) অতিরিক্ত সচিব এসএম ফেরদৌস আলম,  বিআইডব্লিউটিএ’র চেয়ারম্যান আরিফ আহমেদ মোস্তফা, কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক সাইদুল আরীফ, পুলিশ সুপার আল আসাদ মো. মাহফুজুল ইসলাম, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. রুকুনুজ্জামান শাহিন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জাকির হোসেন, সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম লিচু, বাংলাদেশের ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন প্রমুখ।

বিআইডব্লিউটিএ’র চিলমারী নৌবন্দরের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ব্রহ্মপুত্র নদের বুকে চিলমারী-রৌমারী রুটে নৌপথের দৈর্ঘ্য ২১ কিলোমিটার। তবে নদের ড্রেজিং করা হলে এ পথের দৈর্ঘ্য কমে হবে ১৩ থেকে ১৪ কিলোমিটার। কুড়িগ্রাম জেলার ৯টি উপজেলার মধ্যে দুটি উপজেলা রৌমারী ও চর রাজীবপুর ব্রহ্মপুত্র নদ দ্বারা বিচ্ছিন্ন। এ দুটি উপজেলার মানুষকে নৌকায় ঝুঁকি নিয়ে কুড়িগ্রাম জেলা শহরে যেতে হয়। এখন ফেরি চলাচল শুরু হওয়ার পর তারা নিরাপদে ভ্রমণ করতে পারবেন।

পরে ‘কুঞ্জলতা’ নামের ফেরিটি ব্রহ্মপুত্র নদের চিলমারী-রৌমারী রুটে চলাচল শুরু করে।

নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী জানান, মুক্তিযোদ্ধা ও অ্যাম্বুলেন্সের কোনো ভাড়া লাগবে না। এ ছাড়া অন্যান্য যানের ক্ষেত্রে ভাড়া শতকরা ১৫ ভাগ কমানো হয়েছে। 

সুধী সমাবেশে প্রতিমন্ত্রী বলেন, আজ থেকে ফেরি চলাচলের কারণে ব্রহ্মপুত্র নদ বিধৌত রৌমারী-রাজীবপুর উপজেলার মানুষদের জেলা শহরে যাতায়াতে ভোগান্তি কমে আসবে। চিলমারী-রৌমারী রাজিবপুর নয়, কুড়িগ্রামের সঙ্গে ঢাকার যোগাযোগ অনেক সহজ হবে, যাতায়াত খরচও কমে যাবে। পরবর্তীতে আরও একটি ফেরি এ রুটে যুক্ত হবে। উক্ত ফেরিরুটের নাব্যতা বজায় রাখার জন্য দু’টি ড্রেজার থাকবে। ফেরি সার্ভিস চলাচলের মধ্য দিয়ে নদীপথে যোগ হলো যোগাযোগের নতুন মাত্রা।

জানা গেছে, রৌমারী-চিলমারী নৌপথে ভাড়া কমানোর একটা দাবি রেখেছিলেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন। নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে সর্বসাধারণের সুবিধার জন্য কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে প্রস্তাবিত ভাড়া থেকে কমিয়ে সিএনজিচালিত বেবি ট্যাক্সি/অটোরিকশা ৬৬০ টাকা থেকে কমিয়ে ৩০০ টাকা, মোটরসাইকেল ২২০ টাকা থেকে কমিয়ে ১০০ টাকা, বাইসাইকেল ১২০ টাকা থেকে কমিয়ে ৫০ টাকা, জনসাধারণের জন্য প্রস্তাবিত ৮০ টাকা কমিয়ে ৫০ টাকা করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, ব্রহ্মপুত্র নদ জেলার রৌমারী-রাজীবপুর এ দুই উপজেলাকে আলাদা করে রেখেছে। এ দুই উপজেলার হাজার হাজার মানুষকে জেলা শহরে যাতায়াত করতে একমাত্র নৌকার ওপর ভরসা করতে হয়। বর্ষা মৌসুমে অনেক ঝুঁকি নিয়ে তারা জেলা শহরে আসেন নৌপথে। অন্যদিকে শুষ্ক মৌসুমে চরাঞ্চলে আটকে যায় নৌকা। ফলে দুর্ভোগের সীমা থাকে না তাদের। ফেরি চলাচল করলে কমে আসবে ভোগান্তি।

মো. জুয়েল রানা/এমজেইউ